1. newsjibon@gmail.com : adminsp :
দিরাইয়ে সপ্তম শ্রেণীর শিশু-শিক্ষার্থী অপহরণ,ধর্ষন,অপহরণকারী আটক সহযোগিদের হুমকিতে নিরাপত্তাহীনতায় শিশুটির পরিবার - সুনামগঞ্জ প্রতিদিন
মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৫১ অপরাহ্ন

দিরাইয়ে সপ্তম শ্রেণীর শিশু-শিক্ষার্থী অপহরণ,ধর্ষন,অপহরণকারী আটক সহযোগিদের হুমকিতে নিরাপত্তাহীনতায় শিশুটির পরিবার

প্রতিদিন প্রতিবেদক
  • মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪
  • ২৯ বার পঠিত
Spread the love

দিরাই উপজেলার কুলজ্ঞ ইউনিয়নে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের সপ্তম শ্রেণীর( ১২) বছরের এক শিশু শিক্ষার্থীকে অপহরণ ও পাশবিক নির্যাতনের (একাধিকবার ধর্ষনের শিকার) তিনদিনের মাথায় পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধার করে মূল অপহরণকারী মোঃ ফিরোজ মিয়া(২২)কে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করলেও অপহরণের সাথে সংশ্লিষ্ট আরো ৫/৬ জনকে পুলিশ এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি। এ ঘটনায় অপহিৃতার বড়ভাই বাদি হয়ে গত ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ইং তারিখে দিরাই থানায় ২০০০ সনের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন(সংশোধনী/২০০৩)এর ৭/৩০ এ একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং ১৬/৩৬। এরপর থেকে আসামীপক্ষের লোকজন বাদি ও তার পরিবারের সদস্যদের মামলা তুলে নিতে বিভিন্নভাবে প্রাণনাশের হুমকি দামকী দিয়ে আসছে বলে অভিযোগ তাদের। এ ঘটনায় গত ১৫ই মার্চ মেয়েটির বড়ভাই বাদি হয়ে নিজের ও পরিবারের সদস্যদের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে পাশ^বর্তী ধাইপুর গ্রামের কয়েকজনকে অভিযুক্ত করে দিরাই থানায় আরো একটি সাধারন ডায়েরী করেছেন। মামলার অবিযোগ সূত্রে জানা যায়, কুলজ্ঞ ইউনিয়নের বড় বাউশী গ্রামের এক দিনমুজুর ভ্যান চালকের নাবালিকা মেয়ে বোয়ালিয়া বাজারস্থ ফকির মোহাম্মদ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর নাবালিকা শিক্ষার্থী (১২)। সে বড় বাউশী গ্রামের ভ্যান চালকের মেয়ে। যাদের সংসারে নুন আনতে পানতা পুড়ায়। অভাব অনটন ও টানাপোড়নের এই সংসারে গরীব ভ্যানচালক পিতার স্ত্রী,স্কুল কলেজ পড়য়া দুই ছেলে ও সপ্তম শ্রেণীতে পড়–য়া এক মেয়ের সংসার চালাতে তাকে রীতিমতো হিমশিম খেতে হতো । এমন ও সময় ছিল এই পরিবারে দিনে একবেলা আহার জোগাড় করাও খুবই কষ্টকর ছিল। কিন্তু একই ইউনিয়নের পাশর্^বর্তী ধাইপুর গ্রামের মৃত কদরিছ মিয়ার বখাটে পূত্র মোঃ ফিরোজ মিয়া ঐ ভ্যানচালকের বাউশী গ্রামে তার বাড়ির সামনে হাওরে একটি বিলে পাহাড়াদার হিসেবে টিউটি করার সুবাদে ঐ ভ্যানচালকের ঐ কন্যা শিশুটি ঘর থেকে টিউবওয়েলে বের হলে কিংবা স্কুলে আসাযাওয়ার পথে ফিরোজ মিয়া তাকে বিরক্ত করত এবং আকার ইঙ্গিত ও ইশারায় এবং সুযোগ পেলে সরাসরি তাকে কুপ্রÍাব দিত বলে সাংবাদিকদের জানান শিশুটি ও তার বড়ভাই। এমন ঘটনাটি অবুঝ শিশু তার বাবা ভ্যানচালক ও বড়ভাইকে জানানোর পরও তারা ভয়ে ফিরোজ মিয়া ও তার পরিবারকে জানানোর সাহস না পেয়ে নীরবে সহ্য করে যাচ্ছিলেন। কিন্তু ঐ বখাটে বিলের পাহাড়াদার ফিরোজ মিয়া সুযোগ খোঁজার অংশ হিসেবে গত ১৯ ফেব্রুয়ারী রোজ সোমবার রাত আনুমানিক ৯টার দিকে শিশুটি রাতের খাবার খেয়ে হাত মুখ পরিস্কার করতে নিজের বসত ঘর থেকে বাড়ির সামনে টিউবওয়েলে গেলে শিশুটির ঘরের বেড়ার পাশে ওৎপেতে থাকা বখাটে ফিরোজ মিয়া(২২) ও একই গ্রামের তার সাথে থাকা সহযোগিতাকারী অজ্ঞাতনামা ৫/৬ জন মিলে শিশু মেয়েটির মুখে রোমালে স্প্রে লাগিয়ে তাকে অপহরণ করে সিএনজিতে তুলে পালিয়ে যায়। ঐদিন রাতেই শিশুটিকে নিয়ে শান্তিগঞ্জ উপজেলার পাগলা গ্রামে লম্পট ফিরোজের এক স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে শিশুটির উপর পাশবিক নির্যাতন চালায় সে । পরেরদিন গত ২০ ফেব্রুয়ারী শিশুটিকে নিয়ে শ্রীমঙ্গলে যায় এবং সেখানে তার এক স্বজনের বাড়িতে শিশুটিকে নিয়ে রাত্রিযাপন করে এবং পরের দিন অর্থাৎ গত ২১ ফ্রেব্রুয়ারী শিশুটিকে নিয়ে ফিরোজ হবিগঞ্জের আজমিরিগঞ্জের শিবপাশা গ্রামে তার এক স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। ঐ রাতেই শিশুটিকে নিয়ে আনুমানিক তিনটার দিকে ফিরোজ মিয়া তার এলাকায় বিবিয়ানা কলেজের প্রিন্সিপাল ও ভাইটগাঁও গ্রামের নিপেন্দ্র তালুকদারের বাড়িতে আসে। খবর পেয়ে মামলার বাদি অপহিৃত শিশুটির বড়ভাই দিরাই থানা পুলিশকে সাথে নিয়ে রাত আনুমানিক ৪টার দিকে নিপেন্দ্র তালুকদারের বাড়িতে যায় এবং শিশুটিকে উদ্ধার করে । এ সময় অপহরণকারী ফিরোজ মিয়া পালানোর সময় পুলিশ তাকে আটক করে। এদিকে পুলিশ গত ২৩ ফেব্রুয়ারী আটককৃত ফিরোজ মিয়াকে আদালতে উপস্থিত করলে আদালতের বিজ্ঞ বিচারক উপস্থিত সকলের জাবনবন্দি শুনে তার জামিন না মুজ্ঞুর করে ফিরোজকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। ফিরোজ কারাগারে আটক থাকলে ও তার পরিবার ও সহযোগিরা পুলিশের ধরাছোঁয়ার বাহিরে থাকায় মামলার বাদিকে প্রকাশ্য দিবালোকে মামলা তুলে আনতে আপোষ মিমাংসার প্রস্তাব ও হুমকি দামকী দিয়ে আসছিল। এদিকে গত ২৩ ফেব্রুয়ারী অপহিৃত শিশুটির স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। এদিকে মামলার বাদি আসামী ও তার স্বজনদের আপোষ নিস্পত্তিতে সম্মতি না দেওয়ায় আসামীদ্বয় প্রকাশ্যে দিবালোকে তাকে ও পরিবারকে ভয়ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছে বলে জিডিতে উল্লেখ করেন । এ ঘটনায় অপহিৃতা শিশুটির ভাই তার ও পরিাবরের সদস্যদের জানমালের নিরাপত্তা চেয়ে গত ১৫ই মার্চ রোজ শুক্রবার হুমকিদাতা ও অপহরণের সাথে সহায়তাকারী অভিযুক্ত ধাইপুর গ্রামের মৃত আব্দুল কাদিরের ছেলে আজিজুর মিয়া(৪০),আব্দুল হকের ছেলে আখলিছ মিয়া(৩৬),কালাই উল্ল্যাহ”র ছেলে বুলন মিয়া(৩৮),আব্দুল মিয়ার ছেলে আবু হেনা(২৮),আমির উদ্দিন(৫০),নুর ইসলামের ছেলে ছালিক মিয়া(৩২),বরকত উল্ল্যাহ”র ছেলে আফজাল মিয়া(৩৫) তাদের নাম উল্লেখ করে দিরাই থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এ ব্যাপারে আটককৃত ফিরোজ মিয়ার চাচা আমির উদ্দিনের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে সাংবাদিক পরিচয় জেনে ফোনের লাইন কেটে দেন।(উনার ফোন নম্বর-০১৭৪৬০৮৯৭৬০)। এদিকে জিডিতে উল্লেখিত অভিযুক্ত ধাইপুর গ্রামের আজিজুর রহমান ও আবু হেনার সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে মোঃ ফিরোজ মিয়া কর্তৃক একজন সংখ্যালঘু হিন্দু কন্যা শিশু অপহরেণর সত্যতা স্বীকার করলেও এই অপহরণের সাথে তাদের সম্পৃত্তা নেই বলে অস্বীকার করেন। এ ব্যাপারে মামলার বাদি জানান,আমরা হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরীহ মানুষ। আমার বাবা বোয়ালীবাজারে সারাদিন ভ্যান চালিয়ে আমরা দুইভাই ও ছোট বোনটির লেখাপড়ার খরচ চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু পাশের ধাইপুর গ্রামের মৃত কদরিছ মিয়ার বখাটে পূত্র আমাদেও বাড়ির সামনে বিলে পাহাড়াদেও সুবাধে আমার অবুঝ বোনটি ঘর থেকে বের হলে কিংবা স্কুলে আসাযাওয়ার পথে খুব বিরক্ত করলে ও আমরা নিরীহ মানুষ হিসেবে সহ্য করে গেছি। কিন্তু ঐ ফিরোজ আমার নাাবলিকা বোনটিকে অপহরণ ও শারীরিক নির্যাতনের কারণে তার ও তার সকল সহযোগিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের (ফাসিঁর) জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পুলিশ সুপারের নিকট জোর দাবী জানান। এ ব্যাপারে অপহিৃত শিক্ষার্থী ফকির মোহাম্মদ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দিলীপ কুমার চৌধুরী অপহরণের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান এই নাাবলিকা শিশুটি অপহরণের সাথে যারা যারা জড়িত তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানান। এ ব্যাপারে বিবিয়ানা ডিগ্রি মডেল কলেজের অধ্যক্ষ নিপেন্দ্র তালুকদার জানান,হবিগঞ্জের শিবপাশা গ্রাম থেকে একজন ইউপি সদ্য উনাকে ফোনে জানিয়েছেন ছেলেমেয়ে দুজনকে আপনার হাওলায় পাঠাইয়া দিতে চাই। তখন উনি বলেছেন পাঠাইয়া দেওয়ার জন্য। সেই সুবাদে ছেলে ও মেয়ে উনার বাড়িতে আসার পর পুলিশ এসে মেয়েটি মেয়ের পরিবারের জিম্মায় এবং ছেলে ফিরোজকে পুলিশ আটক কওে নিয়ে যায় বলে তিনি জানান। এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(অপরাধ) রাজন কুমার দাস,মূল অপহরণদাকীকে পুলিশ আটক করতে সক্ষম হয়েছে এবং তদন্ত সাপেক্ষে অপহরণের সাথে বাকিদের সংশ্লিষ্টতার প্রমান পাওয়া গেলে শীঘ্রই তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার আশ^াস প্রদান করেন।


Spread the love
এই বিভাগের আরো খবর

ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: জুনায়েদ চৌধুরী জীবন

© All rights reserved © সুনামগঞ্জ প্রতিদিন
Theme Customized BY LatestNews
error: Content is protected !!