1. newsjibon@gmail.com : adminsp :
দিরাইয়ের মিলনগঞ্জ বাজারে নতুন সেতু নির্মাণে দীর্ঘসূত্রিতা সেতু ভাঙায় ভরসা বাঁশের সাঁকো - সুনামগঞ্জ প্রতিদিন
শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ০৩:৪৭ অপরাহ্ন

দিরাইয়ের মিলনগঞ্জ বাজারে নতুন সেতু নির্মাণে দীর্ঘসূত্রিতা সেতু ভাঙায় ভরসা বাঁশের সাঁকো

প্রতিদিন প্রতিবেদক
  • রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪
  • ১৩ বার পঠিত
Spread the love

দিরাই উপজেলার সুরাই নদীতে মিলনগঞ্জ বাজার সেতুটির মধ্যভাগ ভেঙে গেছে। ধসে পড়েছে সেতুর ৪টি পিলারের মধ্যে ৩টির কংক্রিটও। এ অবস্থায় সেতু দিয়ে সবধরনের চলাচল বন্ধ রয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে স্থানীয় লোকজন নিজেদের চলাচলের জন্যে তৈরি করেছেন বাঁশের সাঁকো। গেল ছয়মাস ধরে এই বাঁশের সাঁকো দিয়েই লোকজন কোনোমতে চলাচল করলেও যানচলাচল পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর’র (এলজিইডি) দিরাই উপজেলা প্রকৌশলী মো. ইফতেখার হোসেন প্রতিবেদককে বলেন, পুরাতন সেতুর স্থলে ৫৪ মিটার দৈর্ঘ্যরে একটি নতুন সেতু নির্মাণ করতে ইতোমধ্যে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। সেতুর ডিজাইনও প্রস্তুত হয়ে গেছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন পেলেই পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। আগামী জুনের মধ্যে দরপত্র প্রক্রিয়া শুরু করতে আমরা চেষ্টা করছি। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, দিরাই ও জগন্নাথপুর উপজেলার অধিকাংশ লোকজনের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে এই সেতু। গত কয়েক বছর ধরেই সেতুটি একেবারে ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় ছিল। কিন্তু সেতুর সংস্কারে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ না করায় গেল বর্ষা মৌসুমে সেতুর মধ্যভাগ ভেঙে যায়। ভেঙে যায় মধ্যভাগের দুটি পিলারও। ফলে সেতু দিয়ে লোকজনের চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে আশপাশের কয়েক গ্রামের লোকজন দুর্ভোগে পড়েন। পরবর্তীতে শুকনো মৌসুম শুরু হলে স্থানীয় টংগর গ্রামের লোকজন ভেঙে যাওয়া সেতুর ঠিক উত্তর পাশে বাঁশ দিয়ে সেতুর আদলে একটি বড় সাঁকো নির্মাণ করেন। এরপর থেকে গত প্রায় সাত মাস ধরে এই বাঁশের তৈরি সাঁকো স্থানীয় লোকজনের ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেতুর পূর্ব প্রন্তে টংগর গ্রাম ও পশ্চিম প্রন্তে তারাপাশা গ্রাম। গ্রাম দু’টি দিরাই উপজেলার কুলঞ্জ ইউনিয়নে অবস্থিত। সেতুর ঠিক পশ্চিম প্রন্তে উপজেলার অন্যতম বৃহৎ মিলনগঞ্জ বাজার। এর পাশেই আছে প্রাচীনতম তারাপাশা মাদরাসাসহ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। গ্রামীণ বাজার হলেও বাজারটিতে বিপুল সংখ্যক ক্রেতার আগমন ঘটে। সেতুর ঠিক পূর্ব প্রন্তে আব্দুল মতলিব উচ্চ বিদ্যালয়সহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে প্রতিদিন শতশত শিক্ষার্থী আসা-যাওয়া করেন। এছাড়াও দিরাই উপজেলার তাড়ল, কুলঞ্জ, জগদল ইউনিয়ন, জগন্নাথপুর উপজেলার চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়নসহ আশপাশের কয়েকটি ইউনিয়নের লোকজন শুকনো মৌসুমে এই সেতু দিয়েই সহজে যাতায়াত করতে পারেন। সেতু দিয়ে কয়েকটি ইউনিয়নের বাসিন্দারা কম সময়ে নিকটস্থ উপজেলা জগন্নাথপুর ও বিভাগীয় শহর সিলেটেও যাতায়াত করতেন। সরেজমিনে দেখা যায়, মোট ১২টি পিলারের ওপর ৮০’র দশকে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। সুরাই নদীর ওপরে ৪টি পিলারের ওপর দাঁড় করা হয় সেতুটি। ৪টি পিলারের মধ্যে ৩ টিতে কংক্রিট নেই। পিলারগুলো অকেজো হয়ে পড়ে সেতুর মধ্যভাগ ভেঙে নিচের দিকে ঝুলে পড়ে আছে। পাশের অন্য পিলার গুলোও দুর্বল। বেশ কয়েক বছর আগেই সেতুর রেলিং-এর বেশিরভাগ ভেঙে গেছে। সেতুর পাশে নির্মিত বাঁশের সাঁকো ওপর পায়ে হেঁটে লোকজন চলাচল করছেন। এর বাইরে শুধুমাত্র মোটরসাইকেল চলাচল করা যায়। সাত মাস ধরে দিনরাত্রি লোকজনের চলাচলের ফলে এখন বাঁশের এই সাঁকোও দুর্বল হয়ে পড়ছে। স্থানীয় তারাপাশা গ্রামের বাসিন্দা সৈয়দ উমেদ আলী বলেন, কয়েক বছর ধরে সেতুটির পিলার ভেঙে এই অবস্থায় পড়লেও এর সংস্কার বা নতুন সেতু নির্মাণ না করায় আমরা এলাকাবাসী হতাশ। আমরা সম্মিলিতভাবে সেতুটি নির্মাণের দাবিতে কয়েক দফা আন্দোলনও করেছি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক লেখালেখিও হয়েছে। তবুও সেতুর প্রকল্প আলোর মুখ দেখেনি। এতে লোকজন তাদের ক্ষোভ ও হতাশার কথা তুলে ধরেন। টংগর গ্রামের বাসিন্দা ও কুলঞ্জ ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড সদস্য আব্দুল ওয়াদুদ খান জানান, ৮০’র দশকে নির্মিত পুরাতন সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় এলাকাবাসী দুর্ভোগে পড়েন। আমরা নিজেদের অর্থে মানুষের যাতায়াতের সুবিধার্থে বাঁশ দিয়ে সেতু তৈরি করি। এই সেতু দিয়ে প্রতিদিন স্কুল ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীসহ বিপুল সংখ্যক লোক চলাচল করেন। নতুন সেতু নির্মাণের জন্যে বার বার দাবি জানালেও বাস্তবে কোনো কাজের কাজ হয়নি। তিনি এলাকার মানুষের দুঃখ-দুর্দশার অবসানে অবিলম্বে সেতু নির্মাণের দাবি জানান। জানা গেছে, প্রায় চার দশক আগে উপজেলা পদ্ধতির শুরুতে (সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপি’র কেন্দ্রীয় সদস্য) নাছির উদ্দিন চৌধুরী উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েই সুরাই নদীর উপর এই সেতুটি নির্মাণ করেন। সেতুটি নির্মাণের পর নদীর উভয় পাশের টংগর ও তারাপাশাসহ আশপাশের গ্রামসমূহের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজতর হয়ে উঠে। সেতুকে ঘিরেই প্রথমে সুরাই নদীর তীরে গড়ে উঠে হাট। ছোট্ট হাট থেকেই চার গ্রামের সকলের ঐক্যে মিলনগঞ্জ বাজার প্রতিষ্ঠা লাভ করে।


Spread the love
এই বিভাগের আরো খবর

ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: জুনায়েদ চৌধুরী জীবন

© All rights reserved © সুনামগঞ্জ প্রতিদিন
Theme Customized BY LatestNews
error: Content is protected !!