1. newsjibon@gmail.com : adminsp :
সুনামগঞ্জের বোরো ফসল নিয়ে উৎকণ্ঠায় কৃষক প্রধানমন্ত্রী হাওরবাসীর খোঁজ-খবর রাখছেন - সুনামগঞ্জ প্রতিদিন
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০১:০৪ অপরাহ্ন

সুনামগঞ্জের বোরো ফসল নিয়ে উৎকণ্ঠায় কৃষক প্রধানমন্ত্রী হাওরবাসীর খোঁজ-খবর রাখছেন

তৌহিদ চৌধুরী প্রদীপ, জামালগঞ্জ
  • শুক্রবার, ১ মার্চ, ২০২৪
  • ৪১ বার পঠিত
Spread the love

–রনজিত চন্দ্র সরকার এমপি
সুনামগঞ্জবাসী বছরের একটি মাত্র বোরো ফসলের উপর নির্ভরশীল। ফসল ভালো হলে তাদের ঘরে থাকে সারা বছর আনন্দ। কোন কারনে ফসলের ক্ষতি হলে বা হাওরের বাঁধ ভেঙ্গে ফসল ডুবির ঘটনা ঘটলে সীমাহীন কষ্ট ভুগ করতে হয় সুনামগঞ্জের হাওরবাসীর। এই বোরো ফসল রক্ষায় সরকার নীতিমালা করে প্রতি বছর কোটি -কোটি টাকা দিলেও নিয়ম অনুযায়ী তেমন কোন কাজ হয়নি। হাওরের বোরো ফসল রক্ষায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) হাওর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ নির্ধারিত সময় সীমা পেরিয়ে গেলেও, এখনও শেষ হয়নি বাঁধ নির্মান কাজ। ফলে কৃষকদের সারা বছরের পরিশ্রমের ফসল রক্ষায় দুশ্চিন্তা যেন পিছু ছাড়ছেনা। এবার সুনামগঞ্জ জেলার ১২ উপজেলায় ৪০ টি হাওরে ৫৯১ কিলোমিটার ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ ও সংষ্কার করতে ৭৩৫ টি প্রকল্পে ১২৫ কোটি টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে। কাবিটা নীতিমালা অনুযায়ী ১৫ ডিসেম্বর (২০২৩) তারিখ বাঁধের নির্মান কাজ শুরু করে ২৮ ফেব্রুয়ারি (২০২৪) এর মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখনো অনেক কাজ বাকী। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) দাবী করেছে হাওরে বাঁধ নির্মাণ কাজ ৮৫ ভাগ শেষ হয়েছে। কিন্তু কৃষকরা বলছে ৫০-৬০ ভাগ কাজ হয়েছে, তবে গুনগতমানের নয়।
জামালগঞ্জের পাকনা হাওর ও হালির হাওর ঘরে কৃষকদের সাথে কথা বল্লে তারা জানান, কাগজে কলমে ৮৫ ভাগ কাজ শেষ হওয়ার কথা বলছে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ কর্তৃপক্ষ। কিন্ত কাজ হয়েছে অনেক কম। অনেক হাওর রক্ষা বাঁধ ৫০-৬০ ভাগ কাজও হয়েছে বলে জানান কৃষকরা । এই অবস্থায় কৃষকরা খুব চিন্তিত ও উৎকণ্ঠায় রয়েছেন। জামালগঞ্জ প্রেসক্লাব সেক্রেটারী বাদল কৃষ্ণ দাসসহ কয়েকজন সংবাদকর্মী বেশ কয়েক দিন ধরে মিনি পাকনা ব্যাতিত পাকনা হাওরের সব ক’টি বাঁধ দেখেছি। কোন বাঁধেই নীতিমালা অনুযায়ী কাজ হয়নি। অনেক পুরোনো অক্ষত বাঁধে নাম মাত্রে কাজ করেই প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) কাজ শেষ হয়েছে বলে দাবী করছে। বিগত কয়েক বছর পূর্বে পাকনা হাওরের পিয়াইন নদীর শাখার পাশে উরার বন্দ বাঁধ ভেঙ্গে পাকনা হাওর ডুবির ঘটনা ঘটেছে। কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, আপনারা খোঁজ খবর নিয়া দেখেন, জামালগঞ্জে গতবছর যারা কাম পাইছিল এবারো তারাই পাইছে। বান্ধের (বাঁধের) পাশে যারার বাড়ি তারা কাম পায়না। ৫-৭ মাইল দুরার মাইনষে কাম পায়। এক জন ৩-৪ কমিটিত রাখছে। এইটা নীতিমালায় নাই। লুটপাট করতে সুবিধার লাইয়া গত বছরের পুরান বান্ধে কিছু মাটি ফালাইয়া লেফা দিছে। লাখ-লাখ টাকা তুলবো সরকারের। রক্ষকই ভক্ষক সাজছে। কইবার জায়গা নাই। কে দেখবো এই সব। এবার সুনামগঞ্জের বিভিন্ন হাওরে ৭৩৪ টি বাঁধের কোনো কোনটিতে স্লোফ, কমপেকশন, ঘাস লাগানোর অনেক কাজ কাজ বাকি আছে । আবার কিছু বাঁধ বালু মাটি দিয়ে উঁচু করা হয়েছে। বাঁধের উপরের অংশ (টপ) ডিজাইন অনুযায়ী না করে কোথাও কোথাও টপের প্রস্ত কম করা হয়েছে। এমন অবস্থায় বাঁধের কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ না হওয়ায়ও ঝুঁকি বেড়েছে। অন্যদিকে মেঘলা আকাশ দেখলেই হাওরপাড়ে মানুষের উদ্বেগÍউৎকণ্ঠা বেড়ে যায়। এদিকে হাওরের বাঁধ বেড়ি বাঁধ টেকসই ও গুনগত মানের নির্মান করতে আন্দোলন ও প্রেস কনফারেন্স করে যাচ্ছে সুনামগঞ্জের কৃষক সম্পৃক্ত সংগঠন “হাওর বাঁচাও আন্দোলন” কমিঠি। এই কমিটির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও সুনামাগঞ্জের প্রবীণ সাংবাদিক বিজন সেন রায় বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড এখন পর্যন্ত হাওরে ৫০-৫৫ ভাগ কাজ করেছে। তাও দায় সারা করে। বাঁধে কোন দর্মুজ করা হয়নি। অনেক ক্লোজার এখনো নির্মান হয়নি। অতীতের চেয়ে আরো খারাপ অবস্থা। পুরাতন অক্ষত বাঁধ গুলোতে বেশী বেশী টাকায় প্রকল্প দিয়েছে পছন্দ করে কমিটি দিয়ে। জামালগঞ্জ, তাহিরপুর, দিরাই, শাল্লা সহ সব উপজেলায় এমনটি হয়েছে। একই ব্যাক্তি কয়েকটি কমিটির সদস্য। বাঁধের সমস্যা হলে ঐ ব্যক্তি কোন বাঁধে থাকবে ? এই অনিয়মগুলো কৃষকরা আমাদের জানিয়েছেন। বাঁধের কারণে ফসলের ক্ষতি হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সব দায় নিতে হবে। চলতি বোরো মওসুমে সুনামগঞ্জের ছোট-বড় ৯৫ টি হাওরে ২ লাখ ২৩ হাজার ৪০৭ হেক্টর জমিতে বোরো ক্ষেত রোপন করা হয়েছে। ১৩ লাখ ৭০ হাজার ২০ টন ধান উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে । এই ধানের বাজার মূল্য হতে পাড়ে প্রায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকা। হাওর এলাকার মানুষের বছরে একটিমাত্র ফসল বোরো ধান, আগাম বন্যা ও পাহাড়ি ঢল থেকে রক্ষা করতে সরকার প্রতিবছর হাওরের বাঁধ নির্মান কাজে শত কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়ে অস্থায়ী ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করে আসছে। কিন্তু পানিউন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) এখনো বাঁধের কাজ শেষ করতে পারেনি।
পানি উন্নয়ন বোর্র্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার মুঠো ফোনে জানান, এখন পর্যন্ত গড়ে ৯১ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। কাজের সুবিধার্থে আরো এক সপ্তাহ সময় বাড়াতে আবেদন করা হয়েছে। দর্মুজ, ঘাস লাগানো সহ কৃষকদের কিছু অভিযোগ শুনেছি। পিআইসিদের কঠোর নির্দেশ দেয়া হয়ে ঠিকমতো কাজ করতে। কোন পিআইসির বাঁধে কাজের সমস্যা হলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এদিকে সুনামগঞ্জ-১ নির্বাচনী এলাকার সংসদ সদস্য এডভোকেট রনজিত চন্দ্র সরকার শুক্রবার দুপুরে শনির হাওর, মানিয়ানি হাওরের বিভিন্ন বাঁধ- বেড়িবাঁধ পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি বলেন, আমি হাওরের বিভিন্ন বাঁধ পরিদর্শন করছি। কৃষকদের ফসল রক্ষায় সরকার সব রকম আন্তরিক চেষ্টা করছে। বাঁধ নির্মানে ভালো কাজ করার জন্য পাউবোকে নির্দশ দেয়া হয়েছে। কারো পিআইসির কাজের গুণগতমান খারাপ হয়ে ফসলের কোন ক্ষতি হলে সব দায় পাউবো ও সংশ্লিষ্টদেরই বহন করতে হবে। কৃষকদের ফসল ঘরে তোলতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কঠোর নির্দেশনা রয়েছে। তিনি হাওরবাসীর খোঁজ খবর রাখছেন।


Spread the love
এই বিভাগের আরো খবর

ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: জুনায়েদ চৌধুরী জীবন

© All rights reserved © সুনামগঞ্জ প্রতিদিন
Theme Customized BY LatestNews
error: Content is protected !!