1. newsjibon@gmail.com : adminsp :
দিরাইয়ের সুদখোরদের অত্যাচারে চেয়ারম্যানের মৃত্যুর ঘটনায় মামলা - সুনামগঞ্জ প্রতিদিন
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:০৫ অপরাহ্ন

দিরাইয়ের সুদখোরদের অত্যাচারে চেয়ারম্যানের মৃত্যুর ঘটনায় মামলা

  • রবিবার, ১৮ জুন, ২০২৩
  • ৯৭ বার পঠিত
Spread the love

দিরাই প্রতিনিধি: সুদখোরদের অত্যাচারে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার রাজানগর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সৌম্য চৌধুরীর (৬০) মৃত্যুর ঘটনার মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার ১৪ দিন পর শনিবার রাতে ৫ জনকে আসামী করে দিরাই থানায় সৌম্য চৌধুরীর স্ত্রী ইলা চৌধুরী বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
অভিযোগে সৌম্য চৌধুরীর মৃত্যুর জন্য দিরাই পৌর সদরের আনোয়ারপুর গ্রামের মৃত আকবুল মিয়ার ছেলে হাবিবুর রহমান হবু (৪৬), দোওজ গ্রামের মৃত আলা উদ্দিনের ছেলে জসিম উদ্দিন (৪০), রাজানগর ইউনিয়নের রাজানগর গ্রামের মৃত সুরেন্দ্র দাসের ছেলে স্বজল দাস (৫৫), একই গ্রামের মৃত রাম কুমার দাসের ছেলে পুতুল দাস (৫২) এবং মৃত কালিচরন দেবনাথের ছেলে অসিত দেব নাথ (৫০) কে আসামী করা হয়েছে।
লিখিত অভিযোগে ইলা চৌধুরী উল্লেখ করেন, আসামীরা সংঘবদ্ধ, সুদখোর ও প্রতারক চক্রের লোক। তার স্বামী সৌম্য চৌধুরী একজন সহজ সরল মানুষ ছিলেন। চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর আসামীরা সৌম্য চৌধুরীর সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলে এবং সেই সুবাদে বিভিন্ন সময় বাড়িতে আসা-যাওয়া করত। আর্থিক সমস্যা দেখা দিলে হাবিবুর রহমান হবু ও জসিম উদ্দিনের কাছ থেকে কিছু টাকা কর্জ বা হাওলাত নিয়েছিলেন সৌম্য চৌধুরী। পরবর্তীতে আসামীরা একে অপরের সহযোগীতায় প্রতারণার মাধ্যমে ব্যাংকের চেকের খালি পাতায় স্বাক্ষর নেয়। কর্জের টাকাকে সুদের টাকা বলে প্রচার করে এবং সৌম্য চৌধুরীর স্বাক্ষর করা খালি চেকে ইচ্ছামত টাকার অংক বসিয়ে আদালতে চেক ডিসঅনার মামলা করে। মামলা চলা অবস্থায় দিরাই পৌরসভার তৎকালীন মেয়র মোশাররফ মিয়ার মধ্যস্থতায় বিষয়টি নিষ্পত্তি হয় এবং সিদ্ধান্ত হয় আসামীরা আদালত থেকে মামলা উঠিয়ে আনবে। কিন্তু হাবিবুর রহমান ও জসিম উদ্দিন সুকৌশলে মামলা না উঠিয়ে সৌম্য চৌধুরীর বিরুদ্ধে আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ায়। মামলায় সাজা হয় সৌম্য চৌধুরীর। ইলা চৌধুরী বলেন, আমাদের বাড়িঘরসহ যাবতীয় সম্পত্তি হবু ও জসিম তাদের নামে রেজিস্ট্রি করে দেয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে। না দিলে পুলিশে ধরিয়ে দেয়ার হুমকি দেয়। এছাড়া আরও কয়েক সুদখোর আমার স্বামীকে বিভিন্নভাবে ভয়-ভীতি হত্যার হুমকি দেয়। তাদের এরূপ কর্মকান্ডে আমার স্বামী মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। সুদখোররা আমার স্বামীকে পুলিশে ধরিয়ে দেয়ার নানা তৎপরতা শুরু করে। বিষয়টি টের পেয়ে আমার স্বামী সিলেটে যাবেন বলে বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। এরপর ৩ জুন সংবাদ পাই মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ থানা পুলিশ কমলগঞ্জ উপজেলার একটি সড়কের পাশ থেকে আমার স্বামীকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করেছে। এরপর হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার আমার স্বামীকে মৃত ঘোষণা করেন। আমার স্বামী হাবিবুর রহমান ও জসিম উদ্দিনসহ কয়েক সুদখোরের মানসিক অত্যাচার ও নির্যাতনে মৃত্যুবরণ করেছেন বলে জানতে পারি। তিনি মৃত্যুর আগে ফেইসবুকে নিজের এই পরিনতির জন্য হাবিবুর রহমান (হবু), জসিম উদ্দিনসহ কয়েকজন সুদখোরকে দায়ী করে স্ট্যাটাস দিয়ে গেছেন।
দিরাই থানার ওসি কাজী মোক্তাদির হোসেন বলেন, এব্যাপারে নিয়মিত মামলা হয়েছে। আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ২ জুন নিজের ফেইসবুকে স্থানীয় দাদন (সুদখোর) ব্যবসায়ী হাবিবুর (হবু), জসিম উদ্দিনসহ ৫জনের নাম উল্লেখ করে লিখেন আমার এ পরিনতির জন্য এরা দায়ি, এদের বিচার দাবি করে লিখেন, “আমি হয়তো দেখে যেতে পারবোনা, বিদায়”। এরপর ৩ জুন দিবাগত রাতে সৌম্য চৌধুরী কে অচেতন অবস্থায় মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল রোডের ফুলবাড়িয়া এলাকা থেকে উদ্ধার করে কমলগঞ্জ থানা পুলিশ। রাতেই মৌলভীবাজার হাসপাতালে মারা যান তিনি। তার মৃত্যুর পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ দিরাইয়ে দাদন ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ঝড় উঠে। বিভিন্ন সংগঠন দিরাইয়ে মানববন্ধন কর্মসুচি পালন করে।
এলাকাবাসি বলছেন, সৌম্য চৌধুরী চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময়ে বিভিন্ন সরকারি সহযোগিতার সুষ্ঠু বণ্টন ও মানুষের পাশে থেকে কাজ করেছেন। সুদখোর সিন্ডিকেট চক্রের শিকার হয়ে তিনি বাড়ি জমি বিক্রি করে দেনা পরিশোধ করেও রেহাই পাননি। সুদখোররা স্টাম্প পেপার ও খালি চেকের পাতায় স্বাক্ষর নিয়ে মনগড়া টাকা বসিয়ে মানসিক নির্যাতন করেছে তাকে।


Spread the love
এই বিভাগের আরো খবর

ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: জুনায়েদ চৌধুরী জীবন

© All rights reserved © সুনামগঞ্জ প্রতিদিন
Theme Customized BY LatestNews
error: Content is protected !!