বিশেষ প্রতিনিধি: স্ত্রী হত্যা’র দায়ে স্বামীকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেছেন আদালত। মঙ্গলবার দুপুরে সুনামগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ মো. হেমায়েত উদ্দিন এই রায় ঘোষণা করেন।
ফাসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন- সুনামগঞ্জ শহরের ষোলঘর এলাকার বাসিন্দা আব্দুর রহমানের ছেলে আব্দুল হামিদ মিল্টন। রায় ঘোষণার সময় আসামি মিল্টন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
রায়ের ঘোষনাটি নিশ্চিত করেছেন আদালতের পিপি খায়রুল কবির রুমেন।
জানা যায়, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের মইনপুর গ্রামের মদরিছ আলমের মেয়ে রিপা বেগমের প্রথম স্বামী ফখর উদ্দিনের সাথে পারিবারিক কলহের কারণে ছাড়াছাড়ি হয়। এক কন্যা সন্তানসহ স্বামীর সংসার ছাড়েন রিপা। পরে আসামি আব্দুল হামিদ মিল্টনকে বিয়ে করেন তিনি। বিয়ের পর তাদের সংসারে এক কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। পারিবারিক কলহের কারণে আসামি আব্দুল হামিদ মিল্টনের সঙ্গেও সংসার করা হয় নি রিপার। গত বছরের তিন ফেব্রুয়ারি আদালতের মাধ্যমে আসামি আব্দুল হামিদ মিল্টনকে তালাক প্রদান করেন স্ত্রী রিপা বেগম। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে রিপা বেগমের স্বামী আসামি আব্দুল হামিদ মিল্টন। সে তার মেয়ে নুদিয়া আক্তারকে তার বাড়িতে নিয়ে যায়। রিপা তার আগের স্বামীর সন্তানসহ বাবার বাড়িতে চলে আসে। ওখানে আসার পর আসামি আব্দুল হামিদ মিল্টনের বন্ধু গোলজারের সাথে স্ত্রী রিপা বেগমের সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে গোলজারকে নিয়ে স্ত্রী রিপা বেগম তার প্রথম স্বামীর কন্যা সন্তান ফাহমিদাকে নিয়ে স্বামী স্ত্রী পরিচয়ে তেঘরিয়ায় বাসা নিয়ে বসবাস করেন। আসামি আব্দুল হামিদ মিল্টন গত বছরের ৬ মার্চ বেলা ১১টায় তেঘরিয়ার সেই বাসাতে গিয়ে রিপা বেগমকে দরজা খুলত বললে, রিপা বেগম দরজা খুলে দেন। পরে ঘরে ঢুকে মিল্টন স্ত্রীর গলা কেটে হত্যা করে মেঝেতে ফেলে রাখে। মৃত্যুর আগে রিপা বেগমের চিৎকারে আশপাশের ভাড়াটিয়াসহ স্থানীয় লোকজন এসে ঘরের দরজা খুললে তার মরদেহ রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে। হত্যার পর আসামি মিল্টন পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় রিপার বাবা মদরিছ আলম আব্দুল হামিদ মিল্টনের বিরুদ্ধে খুনের মামলা মামলা দায়ের করেন। শুনানী শেষে আদালত মঙ্গলবার আসামি আব্দুল হামিদ মিল্টনকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন।
আদালতের পিপি খায়রুল কবির রুমেন বলেন, আসামির মৃত্যুদণ্ডে রাষ্ট্রপক্ষ সন্তোষ্ট হয়েছে। অপরদিকে আসামি পক্ষ জানিয়েছে রায়ের বিরুদ্ধে তারা উচ্চ আদালতে আপিল করবে।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: জুনায়েদ চৌধুরী জীবন