1. newsjibon@gmail.com : adminsp :
সরকারের নজরে নেই মোঘল আমলের ঐতিহাসিক মন্দির - সুনামগঞ্জ প্রতিদিন
শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ০৭:৫৬ পূর্বাহ্ন

সরকারের নজরে নেই মোঘল আমলের ঐতিহাসিক মন্দির

  • মঙ্গলবার, ৫ মার্চ, ২০২৪
  • ৪২ বার পঠিত
Spread the love

শান্তিগঞ্জ প্রতিনিধি: মানুষ ধর্ম কর্ম করেন। ধর্মীয় কাজের অংশ হিসেবে নিজেদের সঁপে দেন স্রষ্টার কাছে আত্মার প্রশান্তি আর স্বর্গীয় সুখের আশায়। যে পবিত্র জায়গায় গিয়ে মানুষ নিজেকে আত্মশুদ্ধি করার মতো মহৎকর্মের সুযোগ পান সে জায়গাটার নাম হচ্ছে ধর্মীয় উপাসনালয়। সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষদের এমনই একটি প্রাচীন উপাসনালয় হচ্ছে শান্তিগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নের কয়েক শতাব্দি পুরোনো ঐতিহাসিক রামকৃষ্ণ জিউর আখড়া মন্দির। তবে ভক্তের আরাধনার এই হৃদয়ের মন্দির অযত্ন অবহেলায় নষ্ট হলেও চোখ নেই প্রশাসনের। পাগলা-বীরগাঁও রাস্তা থেকে আখড়া হয়ে দক্ষিণের হাওরের কূল ঘেঁষে প্রায় পাঁচ একর জায়গায় প্রকৃতির এক নয়নাভিরাম পরিবেশের মাঝে ৩ শতকেরও বেশি বছরের সময় ধরে কালের সাক্ষী হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে এই মন্দিরটি। প্রতিষ্ঠাকাল থেকে আজ অব্দি অসংখ্য ভক্তকূল আসেন শ্রী রামকৃষ্ণ গোসাঁই’র এ আখড়ায়। এখানে এসে ভক্তরা পান আত্মার খোরাকি। নানা আনুষ্ঠানিকতায় করেন ভগবান ও ধর্মগুরু শ্রী রামকৃষ্ণ গোসাঁই’র আরাধনা। স্থানীয় ভক্তরা মনে করেন, সদা জাগ্রত এ মন্দিরে মানুষ আসলে পরম প্রশান্তি লাভ করেন। এ মন্দিরের পূর্ব দিকে আছে পদ্মপুকুর এবং উত্তর দিকে শীতলী পুকুর। পুকুর দু’টিতে শান বাঁধানো ঘাট। সুশীতল বৃক্ষ ছায়ায় শোভিত আখড়ার শান্ত নিবিড় পরিবেশ মনে প্রশান্তির বাতাবরণ তৈরি করে। রামকৃষ্ণ জিউর আখড়া, সনাতন মন্দির, নাট মন্দির, ভোগ মন্দির, পদ্মপুকুর ও শীতলী পুকুর সব মিলিয়ে যেনো এখানে এক আধ্যাত্মিক মেল বন্ধনের সূত্র খুঁজে পান ভক্তরা। তথ্যানুসন্ধান করে জানা যায়, ষোড়শ শতাব্দির শেষের দিকে অর্থাৎ ১৫৭৬ সালে মাছুলিয়ার বিথঙ্গলে (বর্তমান হবিগঞ্জ জেলার পৃথিবীর সবচেয়ে বড় গ্রাম বানিয়াচং) এই গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন সনাতন ধর্মপ্রাণ সাধুপুরুষ শ্রী রামকৃষ্ণ গোসাঁই। তারই ৭ম শিষ্য শ্রী চৈতন্য গোসাঁই সাড়ে ৩’শ বছর আগে সপ্তদশ শতাব্দির মাঝামাঝি সময়ে অর্থাৎ ১৬৪৫ থেকে ১৬৬০ সালের দিকে ধর্মগুরু শ্রী রামকৃষ্ণের সম্মানার্থে এই মন্দির স্থাপন করেন। তার সময়ের পরে ভক্তকূল এই মন্দিরের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মোঘল শাসনামলের সময় নির্মিত হওয়ায় মন্দিরের নির্মানশৈলীতে কিছুটা মোঘল স্থাপত্যশৈলীর ছাপ পাওয়া যায়। চতুষ্কোণ বিশিষ্ট মন্দিরের চৌচালা চাল যে কারো দৃষ্টি কাড়ে। মন্দিরের চার দেয়ালে আছে ঐতিহ্যের চিহ্ন। বহুকাল আগে স্থাপিত হওয়ায় সংস্কার হয়েছে অসংখ্যবার। রামকৃষ্ণ জিউর আখড়া মন্দির হলেও এখানে নির্মাণাধীন আছে সনাতন মন্দির ও নাট মন্দির। আছে জগন্নাথ মন্দির ও ভোগ মন্দিরও। মন্দিরের সেবায়েত থাকার জন্য আলাদা ঘর রয়েছে। বর্তমানে মহাদেব বৈষ্ণব নামের একজন সেবায়েত আছেন। এখানে সেবার কাজে নিয়োজিত আছেন একজন বৈষ্ণবীও। মন্দিরে যাওয়ার রাস্তাাটি পাকা হলেও মন্দির পর্যন্ত এখনো পাকা হয়নি। বর্ষা মৌসুমে ভক্তরা পড়েন দূর্ভোগে। চারপাশের সীমানা প্রাচীর নির্মাণাধীন। কাজগুলো সম্পন্ন করতে দরকার সরকারী সহযোগিতা। ইউপি সদস্য রঞ্জিত সূত্রধর বলেন, রামকৃষ্ণ জিউড় আখড়া একটি ঐতিহাসিক নিদর্শন। যা কয়েকশো বছরের পুরনো স্থাপত্যশৈলী। এটি ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে স্বমহিমায় দাঁড়িয়ে আছে। প্রাচীনতম রামকৃষ্ণ এই জিউড় আখড়াটি অযত্নে অবহেলায় পড়ে আছে। প্রাচীনতম এই মন্দিরটি সংস্কার করার জন্য সরকারের ধর্ম মন্ত্রণালয় ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিগণের কাছে আকুল আবেদন জানাচ্ছি। সুরঞ্জিত চৌধুরী টপ্পা বলেন, শ্রী রামকৃষ্ণ গোসাঁই সারা জীবনই মানুষকে ভালোবাসার কথা বলেছেন। রামকৃষ্ণ জিউর আখড়া মন্দিরটি অনেক পুরোনো। মোঘল শাসনামলে নির্মিত হয়েছে। সপ্তদশ শতাব্দির মাঝামাঝি সময়ে এটি নির্মিত হয়েছে বলে জানা যায়। অনুমান করা হয় যে, শ্রী রামকৃষ্ণ গোসাঁইর সপ্তম শিষ্য শ্রী চৈতন্য গোসাঁই এ মন্দিরটি স্থাপন করেছেন।


Spread the love
এই বিভাগের আরো খবর

ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: জুনায়েদ চৌধুরী জীবন

© All rights reserved © সুনামগঞ্জ প্রতিদিন
Theme Customized BY LatestNews
error: Content is protected !!