শান্তিগঞ্জ প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার একটি মসজিদে দান করা কাঁঠালের নিলামকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের মধ্যে কয়েজন। সোমবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার জয়কলস ইউনিয়নের হাসনাক দফা সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৪০ বাদ গ্রামে দ্বীন ইসলামের প্রতিপক্ষ মালদর সুনু মিয়া ও জুনাব আলীর পক্ষের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

খবর পেয়ে শান্তিগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।

নিহতরা হলেন- হাসনাবাজ গ্রামের দ্বীন ইসলামের মৃত আবদুল লতিফের ছেলে নূরুল হক (৪২) এবং একই গ্রামের আবদুল ছফির ছেলে বাবুল মিয়া (৫০)। অপর নিহত ব্যক্তির নাম মো. শাহ জাহান (৫০)। তিনি মালদর পক্ষের আবদুল ওয়াছিরের ছেলে। এ ঘটনায় নূরুল ইসলাম নূরুল (৩৫), জিলাল মিয়া (৩৫), বুরহান উদ্দিন (৩৪), মিজানুর রহমান (২৫), শাহাদুল ইসলাম (৪৫), আনোয়ার উদ্দিন (৫৫), আফাজ মিয়া (৩৫), আমিরুল ইসলাম (৩০), আকরাম উদ্দিন (২৬), দিলাল মিয়া (৪০), শুকুর আলী (৬৫), সিজুল মিয়া (২৩), জুলু মিয়া (৪৫), মালদর পক্ষের ইশাদ আলী (৬০) ও ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জহুরুল ইসলাম (৪০)সহ উভয়পক্ষের প্রায় ৪০ জন মানুষ আহত হয়েছেন। তাৎক্ষণিকভাবে অন্য আহতদের নাম জানা সম্ভব হয়নি। আহতদের মধ্যে নূরুল ইসলাম নূরুল, ইশাদ আলী ও দিলাল মিয়ার অবস্থা আশঙ্কাজনক।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত শুক্রবার (৭ জুলাই) জুম্মার নামাজের পর মসজিদের একটি কাঁঠার নিলামে তুলা হয়। নিলামে অন্যান্যদের সাথে অংশগ্রহণ করেন এই গ্রামের মালদর পক্ষের শেখ মিয়া, খচরু মিয়া ও মইনুর ইসলাম। এদের মধ্য খচরু মিয়া কাঁঠালটি কিনে নেন। কাঁঠাল নিলামের পর দ্বীন ইসলাম পক্ষের আবদুল বাহার বলেন কাঁঠালটি আরও বেশি দামে বিক্রি হতে পারতো। তাছাড়া যে নিলামের ডাকের কথা শোনা যায়নি বলেও অভিযোগ করেন একপক্ষ। এ নিয়ে ক্রেতা খচরু ও বাহারের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এর জেরে গত দু’দিন ধরে গ্রামে উত্তেজনা বিরাজ করছিলো। পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা মিলে তাদেরকে ঝগড়াঝাটি থেকে বিরত থাকতে একাধিবার বুঝিয়েছেন। তারা তা বুঝেন নি।

সোমবার সকালে দ্বীন ইসলামের লোকজনের সঙ্গে প্রতিপক্ষ সুনু মিয়া ও জুনাব আলীর লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হন। এতে বাবুল মিয়া ও নুরুল ইসলাম ঘটনাস্থলেই নিহত হন এবং গুরুতর আহত অবস্থায় সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে মো. শাহজাহান মিয়া মারা যান। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, জায়গা-জমি  নিয়ে এই দুই গ্রুপের মধ্যে পূর্ব বিরোধ ছিল।

এ ব্যাপারে জয়কলস ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল বাছিত সুজন জানান, রোববার রাতে এবং আজকে ভোরে হাসনাবাদ গ্রামে গিয়ে উভয়পক্ষের লোকজনের সঙ্গে আলাদাভাবে বৈঠক করে কথা বলেছি। উভয়পক্ষের লোকজন আমাকে আশ্বস্ত করেছিলেন- কোনো পক্ষই মারামারিতে যাবেন না। এমন আশ্বাসের পর তাদের শান্ত করে উপজেলা পরিষদের মিটিংয়ে আমি চলে আসি। পরে শুনতে পাই উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। একটি কাঁঠাল নিয়ে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা খুবই দুঃখজনক।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে শান্তিগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ খালেদ চৌধুরী বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখতে হাসনাবাদ গ্রামে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তিনি বলেন, এ ঘটনায় ৫জনকে আটক করা হয়েছে। নিহতদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।