ভাটির জনপদ সুনামগঞ্জ জেলায় চলতি মৌসুমে ২ লাখ ২৩ হাজার ২৪৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছেন কৃষকরা। আবাদকৃত জমি থেকে ১৩ লাখ ৭০ হাজার ২০২ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হবে। যার বাজার মূল্য ৪ হাজার ১০০ কোটি টাকা। ইতিমধ্যে ৭৫ ভাগ ফসল কাটা সম্পন্ন হয়েছে। সুনামগঞ্জে বোরো ফসলের ভাল এবং বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষকদের মধ্যে খুশীর যেন অন্ত নেই। সর্বত্র ধুম পড়েছে ধান কাটার। কম্বাইন্ড হারভেষ্টার মেশিন হওয়ায় দ্রুত ধান কাটা হচ্ছে হাওরে। ধান মাড়াইয়ের জন্য খলায় খলায় চলছে বোরো উৎসব। কৃষান কৃষানীরা হাওরে হাওরে স্বপ্নে বিভোর হয়ে আনন্দে নাচছেন। গেলবারও তারা বাম্পার ফসল ঘরে তুলেছেন। ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্নে বিভোর গোটা কৃষক সমাজ। হাওর ঘুরে জানা গেছে গ্রামে লোকজনের দেখা মিলেনা। জরুরি কাজেও ফোনে পাওয়া যায়না কাউকে। সবই ফসল কাটা,ধান মাড়াই ও শুকানো নিয়ে ব্যস্ত। অনেকে মেয়ের বিয়ের প্রস্তুতিসহ সারা বছর সানন্দে জীবন অতিবাহিত করার স্বপ্ন দেখছেন। নারীরা অভিভাবকের সাথে ধান তুলার কাজে করছেন সহায়তা। শিশু কিশোররাও খড়ে দোল খাচ্ছে। দেখার হাওরের কৃষক মনসুর আহমদ বলেন, এবার ২০ কেদার জমি রোপন করেছি। ধান কাটা ৬০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। প্রতি কেদারে ২৫ মন করে ধান মিলছে। করচার হাওরে কথা হয় কৃষক শফিকুল ইসলামের সাথে। তিনি বলেন, আবহাওয়া ভাল হওয়ায় ফসল ঘরে তুলতে পারছি। এবার উগার ধান ভরে যাবে। শনির হাওরের কৃষক আব্দুল জাহান জানান, কয়েক হাল জমিতে ভালো ফলন হয়েছে। ধান কাটা ৭০ ভাগ শেষ হয়েছে। আগামী এক সপ্তাহ সময় পেলে ছঠাক পরিমাণ ধানও থাকবেনা হাওরে। হালির হাওরের কৃষক দেবেশ দাস বলেন, এভাবে ফলন হলে যাদের বেশি জমি আছে তাদের ইউরোপে যাওয়ার দরকার নাই। আমি এ বছর ১০০০ মন ধান আশা করছি। আশা করি ধানের রেইটও বেশি পাব। ছায়ার হাওরের কৃষক হাশিম উল্লাহ বলেন,আমরা গৃহস্থ পরিবার। হাওরে ৫ হাল জমি আছে। বছর ভালা হলে আমরাই ধনী। বছর খারাপ হলে ফকির। এবার ধানের বাম্পার ফলন দেখে খুশি লাগছে। সুনামগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা বাসসকে বলেন,চলতি মৌসুমে সুনামগঞ্জে ২ লাখ ২৩ হাজার ২৪৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছেন কৃষকরা। যেখান থেকে ১৩ লাখ ৭০ হাজার ২০২ মেট্রিক টন ধান উৎপাদিত হবে। উৎপাদিত ধানের বাজার মূল্য ৪ হাজার ১০০ কোটি টাকা। তিনি আরো বলেন,বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) পর্যন্ত সুনামগঞ্জ জেলায় শতকরা ৭৫ ভাগ ফসল কাটা সম্পন্ন হয়েছে। প্রকৃতি অনুকূলে থাকলে আগামী এক সপ্তাহে শতভাগ ধান কাটা সুসম্পন্ন হবে।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: জুনায়েদ চৌধুরী জীবন