1. newsjibon@gmail.com : adminsp :
দলাদলিতে স্থবির দিরাইয়ের হাতিয়া উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের কার্যক্রম - সুনামগঞ্জ প্রতিদিন
বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ০৬:৩৩ অপরাহ্ন

দলাদলিতে স্থবির দিরাইয়ের হাতিয়া উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের কার্যক্রম

  • মঙ্গলবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২৪
  • ৫৮ বার পঠিত
Spread the love

মোশাহিদ আহমদ, দিরাই : সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার হাতিয়া উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের বাতিল কমিটির সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দ্বন্ধে রীতিমতো অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ১৮ ডিসেম্বর সিলেট শিক্ষা বোর্ডের আদেশে নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগে গভর্নিং বডি বাতিল হয়। এডহক কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে এ বিরোধের সৃষ্টি হয় বলে জানা গেছে। ওই প্রতিষ্ঠানের দুইজন শিক্ষক এখন নিজেদের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দাবী করছেন। দুইজনই জানিয়েছেন গভর্নিং বডি রেজুলেশন করে তাদের ভারপ্রাপ্ত প্রধানের দায়িত্ব দিয়েছেন। এদের একজন সহকারি প্রধান শিক্ষক মো. হেলাল উদ্দিন এবং অপরজন হলেন সহকারি শিক্ষক রিনা রানী দাস। তাদের দলাদলিতে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনায় রীতিমতো অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটিকে বাঁচাতে কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপের দাবী জানিয়েছেন এলাকার লোকজন। জানা যায়, প্রধান শিক্ষক সাজিদুল ইসলাম দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকায় গত ৫ অক্টোবর রেজুলেশন করে সহকারি প্রধান শিক্ষক মো. হেলাল উদ্দিনকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেয় গভর্নিং বডি। ১৮ ডিসেম্বর ওই গর্ভনিং বডি বাতিল করে এডহক কমিটি গঠনের নির্দেশনা দিয়ে চিঠি দেয় বোর্ড। এরই প্রেক্ষিতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. হেলাল উদ্দিন এডহক কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করতে চাইলে বিরোধ দেখা দেয় বাতিল হওয়া গর্ভনিং বডির সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান একরার হোসেনসহ অন্য সদস্যদের সঙ্গে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, ৯ জানুয়ারি আমি ও সহকারি শিক্ষক আনিসুর রহমান সিলেট বোর্ডে এডহক কমিটি গঠনে অনুমোদনের কাজ শেষ করে বেলা আনুমানিক ৩টার দিকে বের হই। মূল ফটকে আসামাত্র বাতিল কমিটির সদস্য শাহরিয়ার শামীম আমাদের ওপর চড়াও হন এবং আমার কাছে থাকা ব্যাগটি ছিনিয়ে নেন। ওই ব্যাগে আমার নগদ টাকা ও প্রয়োজনীয় কাগজ-পত্র ছিল। এ সময় চেয়ারম্যান একরার হোসেন মোবাইল ফোনে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও হুমকি দেন। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, এখন উনারা বলছে ১৭ ডিসেম্বর আরেকজনকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দিয়েছেন। আমিতো এখানে দায়িত্বরত আছি। আমাকে কোন শোকজ দেয়া হয়নি। ১১ জানুয়ারি শিক্ষকদের বেতন বিল আমার স্বাক্ষরে হয়েছে। হেলাল উদ্দিন বলেন, আমার কাছে কিংবা আমাদের ইসডেক্সধারী অফিস সহকারীর কাছে প্রতিষ্ঠানের কোন কাগজপত্র নেই। বিভিন্ন পাসওয়ার্ড ইআইএমএস, ব্যাংক বেইজ, এমপিও কপি, ই-মেইল, নৈপুন্য অ্যাপসসহ সবই জাহারুল ইসলাম নামের একজন দখল করে রেখেছেন। তার কাছে কিছু চাইলে সে বলে সভাপতির কাছে আছে। এই জাহারুল ইসলাম এখানে কোন পদে আছেন, সেটা আমার জানা নেই। গত নির্বাচনে তিনি প্রভাষক পরিচয়ে নির্বাচনী দায়িত্ব পেতে আবেদন করেন। স্কুল সেকশনের হাজিরা খাতায় লেখা আছে তিনি খন্ডকালীন টিচার। কলেজ সেকশনের খাতায় উনার নাম নেই। কিন্তু কমিটির ক্ষমতাবলে তিনিই এখানে সর্বেসর্বা। সহকারি শিক্ষক রিনা রানী দাস বলেন, ১৭ ডিসেম্বর গভর্নিং বডি রেজুলেশন করে আমাকে চলতি দায়িত্ব প্রদান করেছেন। তবে এখনো দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়া হয়নি। বাতিল গভর্নিং বডির সদস্য শাহরিয়ার শামীম বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে। এসব ষরযন্ত্র। তাদের সাথে আমার কোন দেখাই হয়নি। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ দেখলেই আমার কথার সত্যতা পাওয়া যাবে। বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী মো. শরীফ উদ্দিন বলেন, ২০১৩ সাল থেকে আমি এখানে দায়িত্ব পালন করছি। বিদ্যালয়ের আয়-ব্যয়ের হিসাব অনেক সময় হইতো। কিছুটা কমিটির কাছে থাকতো। সভাপতির কাছে টাকা থাকতো, হেড স্যারের কাছে টাকা থাকতো। এগুলো মিলাইতে আমার অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হতো। জাহারুল ইসলামের কাছে হিসাব বুঝিয়ে দিতে হেড স্যার আমাকে বিভিন্নভাবে চাপ দিতেন। এরপর ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে ওরা জোরপূর্বক আমার কাছ থেকে হিসাব নিয়ে গেছে। আমি এই পদে নিয়োগপ্রাপ্ত এবং এমপিওভুক্ত। কিন্তু বিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র, ফাইল, ইমেইল এমনকি আলমিরার চাবিটাও কমিটি ও প্রধান শিক্ষক আমার কাছ থেকে নিয়ে জাহারুল ইসলামকে দিয়ে দিছে। আমার কাছে কিছুই নেই। ইউপি চেয়ারম্যান একরার হোসেন বলেন, আমাদের কমিটির সদস্য শাহরিয়ার শামীমের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে সেটা হাস্যকর। আমি নিজে দেখেছি ওইদিন হাজিরা খাতায় উনাদের স্বাক্ষর ছিল। এরমানে উনারা বিদ্যালয়েই ছিলেন। কমিটি ভেঙ্গে দেয়ার যে আদেশ বোর্ড দিয়েছেন, এর বিরুদ্ধে আমরা হাইকোর্টে রিট করেছি। তবে রায় যাই আসুক এর অপেক্ষায় না থেকে আমরা দায়িত্ব হস্তান্তরের প্রস্তুতি নিচ্ছি। ভারপ্রাপ্ত প্রধানের দায়িত্ব আমরা প্রথমে হেলাল সাহেবকে দিলেও তিনি ক্লাসে অমনোযোগী, অনুপস্থিতিত থেকেও হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করা, প্রশাসনিক কাজে স্থবিরতা দেখা দেয়ায় পরবর্তীতে রিনা রানী দাসকে চলতি দায়িত্ব দেয়া হয়। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আজিজার রহমান বলেন,র্ হাতিয়া উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের গভর্নিং বডি ভেঙে দিয়েছে বোর্ড। এখন বোর্ডের নির্দেশনামতে পরবর্তী কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে। তিনি বলেন, প্রধান শিক্ষক কিংবা অধ্যক্ষের অনুপস্থিতিতে যিনি সহকারি প্রধান থাকবেন তিনিই ভারপ্রাপ্ত প্রধানের দায়িত্ব পালন করবেন। সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী এর ভিন্ন কিছু করার সুযোগ নেই। কমিটি করে দিলেও এটা গ্রহণযোগ্যতা পাবে না।


Spread the love
এই বিভাগের আরো খবর

ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: জুনায়েদ চৌধুরী জীবন

© All rights reserved © সুনামগঞ্জ প্রতিদিন
Theme Customized BY LatestNews
error: Content is protected !!