1. newsjibon@gmail.com : adminsp :
জামালগঞ্জে বোরোর বাম্পার ফলন, শ্রমিক সংকটে কৃষক - সুনামগঞ্জ প্রতিদিন
শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ০৩:২২ অপরাহ্ন

জামালগঞ্জে বোরোর বাম্পার ফলন, শ্রমিক সংকটে কৃষক

প্রতিদিন প্রতিবেদক
  • রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪
  • ৭ বার পঠিত
Spread the love

জামালগঞ্জে বোরো ধান কাটা, মাড়াই, শুকানোর কাজ চলছে পুরোদমে। বৈশাখের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত চলবে কৃষকের এই কর্মযঞ্জ। উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে ধান কাটতে ব্যস্ত কৃষকেরা। এবারে অন্য বছরের তুলনায় ভালো ফলনে কৃষকের চোখে মুখে হাসির ঝিলিক। কৃষকেরা বলছেন এবার অধিক ফলন হয়েছে। তবে ধান কাটা ও মাড়াই শুকানোর কাজে দেখা দিয়েছে শ্রমিক ও হারভেষ্টারের মেশিনের সংকট। সারা দেশে চলছে তীব্র দাবদাহ। সরকার একাধিকবার হিট এ্যালার্ট জারী করেছে। এই ভয়াবহ তাপমাত্রার কারনে বাড়তি মজুরী দিয়েও মিলছেনা শ্রমিক। সংকট দেখা দিয়েছে কম্বাইন্ড হারভেষ্টার মেশিনের। এক সাথে সব ধান পেকে যাওয়ায় কোনটা রেখে কোনটা কাটবে তা নিয়ে চলছে কৃষকের মাঝে যুদ্ধ। বেশীর ভাগ শ্রমিক দাবদাহের কারনে মাঠে কাজ করতে দাড়াতেই পারছেনা। এমনি অবস্থায় দুশচিন্তায় পড়েছে কৃষক। সরজমিনে ঘুরে পাকনার হাওরের রামপুর গজারিয়া, জামলাবাজ, আলীপুর, কামধরপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায় ধান কাটা পুরোদমে শুরু হয়েছে। পাকা ধান ঘরে তুলতে তীব্র রোদেও নিরলসভাবে কাজ করছে কৃষকগন। স্বপ্নের সোনালী ধান কাটা, মাড়াই ও ঝাড়াই করে গোলায় তোলা হচ্ছে। তারা আশা করছে ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যেই সব ধান গোলায় তুলতে পারবে। কৃষকগনের সাথে কথা বললে তারা জানায় গত বছরের তুলনায় এবার বাম্পার ফলন হয়েছে। এখনো কালবৈশাখীর কোন প্রভাব পড়েনি। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে আমরা সোনালী ধান ঘরে তুলতে আর ১০ থেকে ১৫ দিন লাগবে। কৃষক রহিম আলী বলেন, আমি ৪ বিঘা জমিতে বোর ধান করেছি। প্রচন্ড দাবদাহের কারনে যে জমি গত বছর ৩ হাজার টাকা বিঘায় কেটেছি এখন সেখানে ৫ হাজার টাকা বিঘায় ধান কাটতে হচ্ছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন আমরা সাধারন কৃষক হওয়ায় সরকারী কোন সুযোগ সুবিধা পাইনি। ফলন ভালো হলেও অতিকষ্টে ধান ঘরে তুলতে হবে। আর বেপারীদের দোষ দিয়ে কি করবো। এই গরমে নিজেই দাড়িয়ে থাকতে পারিনা। তবুও ধান কাটা হচ্ছে। নতুবা ধান ক্ষেতেই থাকতো। ধান কাটার শ্রমিক হোসেন মিয়া পাঁচ হাজার টাকা বিঘায় ধান কাটার কথা জিজ্ঞেস করলে বলেন, প্রচন্ড দাবদাহের কারনে ধান ক্ষেতে টিকা যাচ্ছেনা। অন্য বছর একদিনে ৪-৫জন শ্রমিক একবিঘা ধান কাটতে পারতো। এ বছর আট জনেও দিনে এক বিঘা ধান কাটা যায়না। কিছুক্ষন পর পর গরমের কারনে বিশ্রাম নিতে হয়। তাই কৃষকের টাকা বেশী লাগলেও আমাদের ৬শত টাকার উপর রোজ পড়েনা। কৃষক ইয়ার আলী বলেন, ধান চাষ করতে প্রতি বিঘায় খরচ হয় ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। ধান বিক্রি করে শুধু থাকে ৩ থেকে চার হাজার টাকা। এবার শ্রমিক সংকটের কারনে ধান ভালো হলেও লাভ নিয়ে শংকায় আছি। কৃষক সামছুল হক বলেন, অন্যান্য বছর ধান কাটার সময় বালী পাথরের ঘাট-২ সপ্তাহের জন্য বন্ধ রেখে শ্রমিকরা ধান কাটতে প্রশাসন নির্দেশ দিতো। কিন্তু এবার শ্রমিকেরা বালি পাথরের কাজ করার শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। কৃষকদের সাথে আলাপ করে আরো জানা যায়, ভরা মৌসুমে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ধানের দাম কমায়। তাই সরকারীভাবে বাজার তদারকীর পাশাপাশী সরকারী দামটা বাড়ালে কৃষকরা উপকৃত হতো। ফলন ও উৎপাদন খরচ বিবেচনা করে সরকার মূল্য নির্ধারন করলে কৃষকের স্বপ্ন পুরন হতো। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: আলা উদ্দিন জানান, এবারে বোরো মৌসুমে জামালগঞ্জ উপজেলায় ২৪ হাজার ৪শত ৯৭ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে ১৭ হাজার ৫শত ৮০ হেক্টর হাওর, নন হাওর ৬ হাজার ৯শত ১৭ হেক্টর। কাটা হয়েছে ৭৯ পার্সেন্ট। মোট ১৩ হাজার ৮ শত ৮৮ হেক্টর হাওরে ধান কাটা হয়েছে। নন হাওরে কাটা হয়েছে ১১ শত ৭৬ হেক্টর জমিতে। মে মাসের ২ তারিখে বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকায় কৃষকদের ৮০ ভাগ ধান পাকলে কেটে ফেলার জন্য পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। হিট স্ট্রোকের কারনে শ্রমিকের ধান কাটতে কষ্ট হচ্ছে তাই হাওরে হাওরে শ্রমিকের মাঝে স্যালাইন বিতরন করা হচ্ছে এবং কৃষকদের সাথে শারীরিক সচেতনতার জন্য পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আশা করি মে মাসের ৫ তারিখের মধ্যে শতভাগ ধান কাটা সম্ভব হবে।


Spread the love
এই বিভাগের আরো খবর

ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: জুনায়েদ চৌধুরী জীবন

© All rights reserved © সুনামগঞ্জ প্রতিদিন
Theme Customized BY LatestNews
error: Content is protected !!