
বিশেষ প্রতিনিধি: টানা বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জ জেলার সুরমা, যাদুকাটা, কুশিয়ারাসহ সকল নদনদীর পানি বাড়ছে। সোমবার দুপুর পর্যন্ত সুরমা নদীর পানি সুনামগঞ্জের ষোলঘর পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধির কারনে জেলা সদর, ছাতক, দোয়ারাবাজার, বিশ^ম্ভরপুর ও তাহিরপুর উপজেলার নি¤œাঞ্চলে পানি প্রবেশ করছে।
এবারের বন্যায় আক্রান্ত হয়েছেন সুনামগঞ্জ সদর, বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর ও দোয়ারাবাজারসহ ৪ উপজেলার মানুষ।
এদিকে সুনামগঞ্জ পৌর শহরের সাহেব বাড়ি ঘাট, উত্তর আরপিন নগর, পুরান পাড়া, বড়পাড়া এলাকার রাস্তাঘাট বানের পানিতে ডুবে যাওয়ায় যানবাহন চলাচলে বিঘœ ঘটছে। বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর ও দোয়ারাবাজার উপজেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক বানের পানিতে ডুবে গেছে।
পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সুনামগঞ্জ পৌর শহরের নদী তীরবর্তী তেঘরিয়া, নবীনগর, জেলরোড, সাহেববাড়ী, বড়পাড়া এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার অনেকের বাড়িঘর ও রাস্তাঘাটে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। এতে দ্বিতীয় দফা বিড়ম্বনায় পড়েছেন সাধারন মানুষজন। শহরেরর প্রানকেন্দ্র মধ্যবাজারের সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। অনেকের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, তাহিরপুর-বিশ্বম্ভরপুর-সুনামগঞ্জ সড়কের তিন স্থান ঢলের পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় জেলা সদরের সাথে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে। এতে করে ভোগান্তিতে পড়েছেন পর্যটকসহ সাধারণ মানুষ।
গত বন্যায় জেলার বিভিন্ন সড়ক প্লাবিত হয়ে ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় এখনো ভোগান্তি পোহাচ্ছেন এসব এলাকার বাসিন্দারা।
সুনামগঞ্জ পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শামছুদ্দোহা যগান্তরকে বলেন, সুনামগঞ্জে টানা বৃষ্টিপাত এবং ওপাড়ে মেঘালয়ে ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় জেলায় ফের বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে। তবে বৃষ্টিপাত বন্ধ হলে এবং উজান থেকে পানি না আসলে নদীর পানি দ্রুত নেমে যেতে পারে। তিনি বলেন, মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে বুধবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ৫১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। ভারতের চেরাপুঞ্জিতে গেল ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৮১২ মিলিমিটার।
সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, সুনামগঞ্জে দ্বিতীয় দফা বন্যা সৃষ্টি হয়েছে। ১৪ জুন জেলার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির বৈঠক করা হয়েছে। বৈঠকে বন্যা পরিস্থিতি সামাল দিতে সবাইকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। তিনি বলেন,জেলার ১২টি উপজেলায় ইতোমধ্যে ২০ মেট্রিক টন করে খাদ্য সামগ্রী বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।