বিশেষ প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলায় দুই সন্তানকে বাঁচাতে গিয়ে স্রোতে ভেসে গিয়ে নিখোঁজ মা দুর্লভ রানীর (৩০) লাশ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। তবে দুই শিশুসন্তানের খোঁজ মেলেনি এখনো।
মঙ্গলবার বেলা ১১টা ১৫ মিনিটে মাউতি বিলে জালে আটকে থাকা অবস্থায় দুর্লভ রানী দাসের লাশ পাওয়া যায়। নিখোঁজ দুই শিশুসন্তানের লাশ উদ্ধারের চেষ্টা করছে ফায়ার সার্ভিসের সংশ্লিষ্টরা।
দুর্লভ রানী দাস উপজেলার ২নং হবিবপুর ইউপির বিলপুর গ্রামের রথীন্দ্র চন্দ্র দাসের স্ত্রী। তাদের দুই সন্তান জবা রানী দাস (৭) ও বিজয় চন্দ্র দাস (৫)।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শাল্লা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তালেব। তিনি বলেন, মঙ্গলবার মাউতি বিলের হাওড়ের কেটে দেয়া বাঁধের কাছে জালে আটকে থাকা অবস্থায় দুর্লভ রানী দাসের লাশ পাওয়া গেছে।
লাশ উদ্ধার করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শাল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, মায়ের লাশ উদ্ধার হলেও দুই শিশু সন্তান এখনো নিখোঁজ রয়েছে। তবে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ওই দুই শিশুর লাশ উদ্ধার করতে কাজ করে যাচ্ছেন।
এর আগে গতকাল সোমবার (১৯ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে শাল্লা সরকারি কলেজসংলগ্ন সেতুতে উঠতে সড়কের ভাঙ্গা পারাপারের সময় নিখোঁজ হন উপজেলার হবিবপুর ইউনিয়নের বিলপুর গ্রামের রথীন্দ্র দাসের স্ত্রী দুর্লভ রানী দাস (৩০); তার মেয়ে জবা রানী দাস (৭) ও ছেলে বিজয় দাস (৫)।
নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে স্থানীয়দের সহযোগিতায় রাতভর চেষ্টা করেও উদ্ধার না হওয়ায় ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে সকাল থেকে ডুবুরি দলের সাহায্যে উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করছেন স্থানীয় প্রশাসন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবু তালেব বলেন, নিখোঁজ হওয়া মা দুর্লভ রানীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। শিশু সন্তানদের সন্ধান পাওয়া যায়নি। উদ্ধার কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় শাল্লা সরকারি ডিগ্রি কলেজ সংলগ্ন ব্রিজের পূর্বপ্রান্তের অ্যাপ্রোচের নিকটবর্তী দক্ষিণ দিকের শাসখাই বাজারে যাওয়ার রাস্তায় এমন ঘটনা ঘটে। ওই নারী দুই শিশুসহ হেঁটে ডুবন্ত রাস্তা দিয়ে শাল্লা সদরে আসছিলেন। হঠাৎ ওই ব্রিজের পূর্বদিকে নিচু স্থানটিতে কিছুটা স্রোত থাকায় তার জবা রানী দাস স্রোতে ভেসে যায় দাঁড়াইন নদীতে। সন্তানকে বাঁচাতে গিয়ে আরেক সন্তান বিজয় চন্দ্র দাসকে (৫) কোলে নিয়েই নদীতে ঝাঁপ দেন তিনি। এ সময় প্রত্যক্ষদর্শী মোটরসাইকেলে করে শাল্লা উপজেলা সদরে ফেরার সময় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা মুসতাকিন বিল্লাহ ও উপজেলার ডুমরা গ্রামের মোটরসাইকেলচালক সুব্রত দাশ তাদের উদ্ধার করতে গিয়েও ব্যর্থ হন।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: জুনায়েদ চৌধুরী জীবন