শাল্লায় কুরিয়ারা নদী ভাঙ্গনের ফলে ওই নদীর নিকটবর্তী বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ এখন সর্বহারা! ভয়াবহ নদী ভাঙ্গনের ফলে উপজেলার ফয়েজুল্লাহপুর,বিষ্ণুপুর,আননদনগর, প্রতাপপুর ও ভেড়াডহর গ্রামের সহ¯্রাধিক পরিবার বাড়িঘর ও ভিটেমাটি হারিয়ে অন্যের ভিটে এখন অসহায় জীবন-যাপন করছে তারা। তবে ইদানিং গ্রো – ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এমপি পুত্র সৌমেন সেনগুপ্ত নদী ভাঙ্গনের স্থানগুলো পরিদর্শন করে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য ক্ষতিগ্রস্তের আশ্বস্ত করেছেন তিনি। জানা যায় এর আগেও নদী ভাঙ্গনের রোধে পাউবো কতৃক লক্ষ লক্ষ টাকার জিও ব্যাগ ও বস্তা ফেললেও নদী ভাঙ্গন থেকে রেহাই পাচ্ছে না শত শত পরিবার। এলাকাবাসীর সাথে কথা হলে নদী ভাঙ্গনের কবল থেকে বাচার জন্য স্থায়ী কোন পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান তারা। কুশিয়ারা নদীর অব্যাহত ভাঙ্গনের ফলে দিন দিন ছোট হয়ে যাচ্ছে শাল্লা উপজেলার প্রতাপপুর,ফয়েজুল্লাহপুর ও বিষ্ণুপুর সহ বেশ কয়েকটি গ্রাম। এসব গ্রামে হাজার মানুষের বসবাস থাকলেও নদী ভাঙ্গনে নিঃস্ব হয়ে এলাকা ছাড়ছেন অনেকেই। জানা যায় নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়ে ফয়েজুল্লাহপুর গ্রামের অন্তত চারশত পরিবার এখন হাওরে বসত ভিটে বানিয়ে বসবাস করে আসছে। শতশত একর জমি হারিয়ে পথে বসার উপক্রম চলছ। কুশিয়ারা নদীর আগ্রাসীর থাবায় বিলীন হয়ে যাচ্ছে বসত-ভিটাসহ ফসলি জমি। নদী ভাঙ্গন থেকে উপজেলার প্রতাপপুর ও ফয়েজুল্লাহপুরকে রক্ষা করতে হলে চারিদিকে ব্লক বা ড্যামপিং ব্যাবস্থা করে স্থায়ীভাবে ভাঙ্গন রোধের উদ্যোগ গ্রহন করতে সরকারের কাছে দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী। প্রতাপপুর গ্রামবাসী সুত্রে জানা যায়, ভাঙ্গনে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বাজার, মন্দিরসহ কয়েক বছরে গ্রামের পুরনো পাড়াগুলো কয়েকটি নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। শুধু তাই নয় প্রতাপপুর বাজার, ফয়েজুল্লাহপুর গ্রাম নদীর গর্ভে বিলীন হওয়ার পথে। সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কুশিয়ারা নদী দিয়ে অতিমাত্রায় পাহাড়ি ঢলের পানি নামায় প্রতাপপুর বাজার ও ফয়েজুল্লাহপুর বাজার ও গ্রামের বেশির ভাগ অংশে বড় ধরনের ভাঙ্গনে পড়েছে। আর পুরনো গ্রাম ভাঙনের কবলে গিয়ে নতুন করে অন্যত্রে বসবাস করে করে রক্ষা পাচ্ছে তারা। কুশিয়ারা দিনদিন ভয়ানক রুপ ধারণ করে নতুন গ্রামেও ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। এলাকার ভাঙ্গন কবলিত মানুষেরা দ্রুত নদী ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহনের জন্য জনপ্রতিনিধিসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সহযোগীতা কামনা করছেন। প্রতাপপুর বাজার কমিটির সভাপতি পীযুষ দাস বলেন, কুশিয়ারা নদীর ভাঙ্গনে হুমকির মুখে রয়েছে প্রতাপপুর গ্রাম। এমনকি বাজারের বেশিরভাগ অংশ নদী গর্ভে চলে গেছে। আর মাস দুয়েক ভাঙ্গন অব্যাহত থাকলে প্রতাপপুর বাজার বিলীন হয়ে যাবে। তিনি আরো জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ড গতবছর জিও ব্যাগের নামে বরাদ্দ আনলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। তাই ভাঙ্গন থেকে রক্ষা পেতে প্রধানমন্ত্রীর সহযোগীতা কামনা করেন তিনি। যোগাযোগ করা হলে দিরাই শাল্লা আসনের এমপি ড. জয়াসেন গুপ্তা বলেন, গত বছর প্রতাপপুর ও ফয়েজুল্লাহপুরের ভাঙ্গন নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রতিমন্ত্রীর সাথে কথা বলেছি। তিনি আশ্বস্থ করেছেন জরুরীভাবে ভাঙ্গনরোধ প্রকল্পের আওতায় কাজ শুরু করা হবে। শাল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারি প্রকৌশলী মো. রিপন আলী জানান, প্রতাপপুরসহ ৫টি জায়গায় নদী ভাঙ্গন রোধ প্রকল্পের জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। এখন উর্ধতন কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্তনুযায়ী প্রকল্প গ্রহনের ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: জুনায়েদ চৌধুরী জীবন