শান্তিগঞ্জ প্রতিনিধি : নদী ভাঙনে শান্তিগঞ্জের সদরপুর সেতুর অ্যাপ্রোচ সড়ক বিলীন হতে থাকায় সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কে সরাসরি যান চলাচল বন্ধ সহ বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
জেলার নয় উপজেলার সঙ্গে সারাদেশের যোগাযোগ রক্ষা করার একমাত্র পথ সুনামগঞ্জ-সিলেট মহাসড়ক। এই সড়কে সরাসরি যান চলাচল বন্ধ হলে সারাদেশের সঙ্গে সরাসরি সড়ক যোগাযোগের কোন ব্যবস্থা থাকবে না। শান্তিগঞ্জ উপজেলা সদরের সাথে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ থাকবে উপজেলার পূর্বাঞ্চলের চার ইউনিয়নের। বড় ধরণের বিপদ এড়ানোর জন্য সড়কের অ্যাপ্রোচে সাময়িক সংস্কার করেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের দায়িত্বশীলরা জানান, সেতুটি সংস্কারের জন্য পাঁচ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। এখানে নতুন আরেকটি সেতু করারও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সোমবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সেতুর অ্যাপ্রোচের ধস ক্রমশই বাড়ছে। সদরপুর সেতুর লাগুয়া পূর্বপাড়ের উত্তরাংশের কোণার মাটি নিচের দিকে ধেবে গেছে। এর আগে একাধিকবার একই জায়গা ধেবে যাওয়ার কারণে পাথর, বালির বস্তাকে বিটুমিন দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছিলো। সেতুর উত্তর পূর্ব পাড়ের গার্ডওয়ালকে পাশে থাকা বৈদ্যুতিক খুঁটির সাথে দুই-তিন ধাপে টানা দিয়ে আটকানোর চেষ্টা করা হলেও দেয়ালটি পড়ে গিয়েছে । এছাড়াও নাইন্দা নদীর উত্তর ও দক্ষিণ পাড়ে ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছে। ভাঙনের কারণে দুই পাড়ের বিশটিরও বেশি পরিবার ভিটেমাটি হারিয়েছেন, আশ্রয় নিয়েছেন অন্যত্র। এর আগে সেতুর পশ্চিমপাড়ের অংশ ভেঙে যাওয়ায় পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন ছিলো যোগাযোগ ব্যবস্থা। সড়ক ও জনপথের রাতভর চেষ্টায় বেইলি সেতু বসিয়ে স্বাভাবিক করা হয়েছিলো যান চলাচল। এ অংশও যে কোন সময় ভেঙে পড়ার শঙ্কা রয়েছে। সেতুটি পাড় হবার সময় যানবাহন চালক ও যাত্রীরা ভয়ে থাকেন। কখন ধসে নীচে পড়ে যায় পরিবহনটি।
সোমবার দিনভর সড়ক ও জনপথের লোকজনের তত্বাবধানে বালুর বস্তা দিয়ে ধেবে যাওয়া অংশ আটকানোর চেষ্টা হচ্ছিল।
এইপথে নিয়মিত যাতায়াতকারী বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী অরুন পাল বললেন, নদী যেভাবে গিলছে, এভাবে জোড়াতালি দিয়ে সেতুর অ্যাপ্রোচ আটকানো যাবে না।
স্থানীয়রা জানান, এর আগে একাধিকবার এই সেতু ভেঙেছে। যান চলাচল বন্ধ হয়েছে। মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন। ভয়ঙ্কর সড়ক দুর্ঘটনা থেকে যানবাহন ও যাত্রীরা রক্ষা পেয়েছেন। কিন্তু নদী ভাঙতে ভাঙতে যে অবস্থা হয়েছে। এখন সেতুর নিচের দিকে তাকালে ভয় করে। বাস বা ট্রাক সেতুর উপরে উঠলে কেঁপে উঠে। দ্রুত এই সেতুর স্থানে নতুন সেতু করতে হবে। আপাতত বিকল্প পথের ব্যবস্থা করলে ভালো হয়।
সিলেটের দর্শনদেউড়ী মিনিবাস শ্রমিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক কবির উদ্দিন বললেন, এ সড়কে প্রতিদিন যাতায়াত করতে হয়। সদরপুর সেতুর কাছাকাছি আসলেই মনে ভীতিকর অবস্থার সৃষ্টি হয়। কখন যেনো ধ্বসে পড়ে সেতুটি। সেতুতে উঠলে কাঁপতে শুরু করে। বার বার এই সেতু ভাঙে, আর মেরামত করা হয়। এভাবে জোড়াতালি দিয়ে চলছে না আর।
সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপথের বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম প্রামানিক বললেন, সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এটি সংস্কার করা হচ্ছে। সেতুটির দুই পাশে বর্ধিত করার জন্য পাঁচ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। এর দরপত্রের প্রক্রিয়া চলমান আছে। এছাড়াও এই সেতুর পাশে ১৪০ মিটার দৈর্ঘ্য সেতুর দরপত্রের বিষয়টিও প্রক্রিয়াধীন আছে। একসঙ্গে দুইভাবেই এগুচ্ছি আমরা। এই পথ চালু রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: জুনায়েদ চৌধুরী জীবন