২০২২ সালের স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়ে সুনামগঞ্জবাসী। ব্যাপক ক্ষতি হয় জান-মালের। এখনো সেই ক্ষতচিহ্ন রয়ে গেয়ে সড়কে। বিশেষ করে বন্যায় বিপযস্ত গ্রামীণ সড়কগুলো এখনো বেহাল দশায় আছে। সংস্কার না হওয়ায় খানাখন্দে ভরা সড়কে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। ফলে চরম ভোগান্তি রয়েছেন এলাকাবাসী। ২০২২ সালের ১৬ জুন ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে জগন্নাথপুর উপজেলায় ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়। এতে উপজেলার সব কটি সড়ক বানের পানিতে তলিয়ে যায়। বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় সড়ক যোগাযোগব্যবস্থা। বন্যা পরিস্থিতির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে এসব সড়ক থেকে পানি নেমে গেলেও ভাঙন ও খানাখন্দে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয় রাস্তাঘাটের। দুই বছর হতে চললেও এখনো সংস্কার করা হয়নি ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলো। এছাড়া বেশকয়েকটি সেতু ও কালভার্ট রয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ। উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা গেছে, স্মরণকালের ভয়াবহ ওই বন্যায় এলজিইডির আওতাধীন এ উপজেলার কলকলিয়া-তেলিকোনা-চন্ডীডর সড়কে ৫ কিলোমিটার, জগন্নাথপুর-শিবগঞ্জ-বেগমপুর সড়কে ৬ কিলোমিটার, চিলাউড়া-হলিদপুর সড়কে ৫ কিলোমিটার, কেশবপুর-এরালিয়া ভায়া রসুলগঞ্জ সড়কে ১০ কিলোমিটার, শিবগঞ্জ-রানীগঞ্জ সড়কে ২ কিলোমিটার ও মজিদপুর-এরালিয়া সড়কের ২ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিশাল বিশাল গর্ত ও খানাখন্দ রয়েছে। এছাড়াও এ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামীণ সড়কসহ প্রায় ৬০ কিলোমিটার সড়ক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত রয়েছে। স্থানীয়রা জানান, ভয়াবহ ওই বন্যায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে গ্রামীণ সড়ক। ছোট-বড় সড়কগুলোতে অসংখ্য গর্ত সৃষ্টি হয়ে যান চলাচলে অনুপযোগী হয়ে উঠছে। এসব গর্তে বৃষ্টির পানি জমে একাকার হয়ে যায়। ফলে অনেক সময় এসব ক্ষতিগ্রস্ত স্থানে দুর্ঘটনা ঘটছে। সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালক খালেদ মিয়া বলেন, ভাঙা রাস্তায় গাড়ি চালাতে গিয়ে প্রায়ই আমাদের নানা বিপদের সম্মুখীন হতে হয়। যন্ত্রাংশ ভেঙে যায়। গাড়ির অনেক ক্ষতি হয়। তাই বাদ্য হয়ে যাত্রিদের কাছ থেকে বেশি বাড়া নিতে হয়। কলকলিয়া ইউনিয়নের বড় মোহাম্মদপুর গ্রামের বাসিন্দা আনহার মিয়া বলেন, বন্যার ক্ষত এখনো সড়কের বিভিন্ন স্থানে ভাসছে। এ সব ক্ষতিগ্রস্ত স্থানে সংস্কার কাজ না হওয়ায় সীমাহীন দুর্ভোগ বেড়েছে। রোজা রেখে ওই সব সড়কে যাতায়াত খুবই কষ্টকর। শ্রীধরপাশা গ্রামের বাসিন্দা ফাহিম আহমদ বলেন, প্রায় দুই বছর হয়ে গেছে এখনো শ্রীধরপাশা-চন্ডীডর সড়কটি মেরামত করা হয়নি। এ ছাড়া জগদীশপুর সেতু স্রোতে নিচের দিকে দেবে গেছে। ফলে জনসাধারণ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। এ বিষয়ে সুনামগঞ্জ জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী (এলজিইডি) আনোয়ার হোসেন বলেন, আমি এ জেলায় নতুন এসেছি। সব বিষয় জানা নেই। তবে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলোর কাজ শুরু হয়েছে। অনেক সময় তহবিলে টাকা কম থাকায় প্রকল্প বাস্তবায়ন করা যায় না। তাই একটু সময় লাগে। ধারাবাহিকভাবে সকল সড়কে কাজ করা হবে।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: জুনায়েদ চৌধুরী জীবন