প্রতিদিন প্রতিবেদক
সম্প্রতি বন্যায় সুনামগঞ্জের সড়কপথের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ এবং স্থানীয় সরকার প্রকৌশল (এলজিইডি) মিলে জেলায় প্রায় ২৫০ কিলোমিটার গ্রামীণ আঞ্চলিক সড়কের ক্ষতি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে ভেসে উঠছে সড়কের ক্ষত চিহ্ন। ক্ষতিগ্রস্ত সড়কে চরম দুর্ভোগ নিয়ে যাতায়াত করছেন এলাকাবাসী। এদিকে বন্যার পানি নামার পর সড়ক পথে যাত্রীদের ভোগান্তি লাঘবে ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক সাময়িকভাবে সংস্কার করে দেয়ার কথা জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর। সুনামগঞ্জ সওজ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বন্যার প্রবল ¯্রােত, হাওরের ঢেউয়ে সড়ক বিভাগের আওতাধীন ৯৫ দশমিক ৫৬ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সড়কের বাঁধ ওয়াসআউট, বিটুমিনাস সার্ফেস উঠে যাওয়া, সেতুর এ্যাপ্রোচ ধস, খানাখন্দ তৈরি হওয়ায় একাধিক জনগুরুত্বপূর্ণ সড়ক ক্ষতবিক্ষত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গোবিন্দগঞ্জ-ছাতক-দোয়ারাবাজার ২২ কিলোমিটার সড়ক। তিনটি উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এছাড়াও সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক, সুনামগঞ্জ-বিশ^ম্ভরপুর সড়ক, জামালগঞ্জ-সুনামগঞ্জ সড়ক, মদনপুর-দিরাই-শাল্লা সড়ক, দোয়ারাবাজার-সুনামগঞ্জ সড়ক, তাহিরপুর-সুনামগঞ্জ সড়ক এবং পাগলা-জগন্নাথপুর-রাণীগঞ্জ সড়ক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর। এই ক্ষতিগ্রস্ত সড়কপথের সংস্কারে ২৬৯ দশমিক ৭ কোটি টাকার প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল ইসলাম প্রাং। এদিকে, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সাম্প্রতিক বন্যায় সড়কপথের ক্ষয়ক্ষতি ও করণীয় বিষয়ে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সাথে মতবিনিময় সভা করে জেলা প্রশাসন। যাত্রীদের ভোগান্তি লাঘবে আশু পদক্ষেপ কামনা করেন সংশ্লিষ্টরা। সভায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক সংস্কারের বিহীত ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা জানান সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরী। সাম্প্রতিককালের বন্যার ভয়াবহতায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে স্থানীয় সড়ক প্রকৌশলি অধিদপ্তর এলজিইডির আভ্যন্তরীণ ও গ্রামীণ সড়কপথ। এই দপ্তরের প্রায় ১৬০ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। ১২ উপজেলার প্রায় গ্রামীণ সড়ক বয়ে বেড়াচ্ছে বন্যার ক্ষত চিহ্ন। সংশ্লিষ্ট দপ্তর সূত্রে জানা যায়, বন্যার কারণে কিছু কিছু সড়কের সেতু এ্যাপ্রোচে ধস দেখা দিয়েছে। একাধিক সড়ক মাঝ পথে ওয়াশআউট হয়ে গেছে, কিছু রাস্তার সোল্ডার ভেঙে, ঢেউয়ের আঘাতে সড়কের প্রোটেকশন সাইট ব্লক ক্ষতিসহ মাটির রাস্তার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জেলার মধ্যে দোয়ারাবাজার, ছাতক, শান্তিগঞ্জ, জগন্নাথপুর, সদর ও বিশ^ম্ভরপুর উপজেলার গ্রামীণ সড়কের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন এলজিইডি কর্তৃপক্ষ। ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক সংস্কারে প্রায় ৪শ’ কোটির টাকার প্রকল্পের প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন জেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আনোর মিয়া। জনগণের চলাচলের স্বার্থে জরুরি বরাদ্দের মাধ্যমে আপাতত মেরামত করার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক সংস্কারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের চিঠি পাঠানোর কথা জানান এই প্রকৌশলী। বন্যার জেলার সড়কপথের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপনের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী। তবে সড়কপথের পুর্নরবাসনে কিছুটা সময় লাগতে পারে বলে জানান তিনি।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: জুনায়েদ চৌধুরী জীবন