ধর্মপাশা উপজেলার কালীজানা গ্রুপ জলমহালটি ১৪৩১ বঙ্গাব্দের পাঁচ মাস অতিবাহিত হলেও এখনো জলমহালটি ইজারা দেওয়া হয়নি। প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় এটি অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এই সুযোগে স্থানীয় জেলেরা গত দুই মাসের বেশি সময় ধরে নিষিদ্ধ মশারিজাল, চায়না দুয়ারি বাইড় ও বড় জাল দিয়ে অবাধে মাছ নিধন করে আসছেন। জলমহালটি এখনো ইজারা না হওয়ায় সরকার প্রায় এক কোটি টাকা রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ধর্মপাশা উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কালীজানা গ্রুপ জলমহালটি জেলা প্রশাসনের ব্যবস্থানাধীন। এটির আয়তন ২৮১একর ৫৯শতক। ১৪৩১ বঙ্গাব্দ থেকে ১৪৩৩ বঙ্গাব্দ পর্যন্ত তিন বছরের জন্য জলমহালটি ইজারা দেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসন থেকে ১৪৩০ বঙ্গাব্দের ফাল্গুন মাসের প্রথম দিকে দরপত্র আহ্বান করা হয়। এতে পাঁচটি মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিমিটেড অংশ নেয়। কিন্তু জলমহালটি নিয়ে আদালতে মামলা চলমান থাকায় এটি এখনো ইজারা দিতে পারেনি জেলা প্রশাসন। জলমহালটি ইজারা না হওয়ায় এবং অরক্ষিত থাকায় গত দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে স্থানীয় জেলেরা দিনে- রাতে নিষিদ্ধ মশারি জাল, চায়না দুয়ারি বাইর ও বড় জাল দিয়ে দিনে-রাতে অবৈধভাবে অবাধে মাছ শিকার করে আসছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন বলেন, কালীজানা বিলডা অহনও ইজারা দেওয়া অইছে না। সরহারিভাবে কেউ আইসা নিষেধও দিতাছে না। তাই আমরা মাছ ধরতাছি। কুনু সমিতির নামে ইজারা অইলে আমরা মাছ ধরতাম না। উপজেলার কালীজানা বিল গ্রুপ মৎস্যজীবি সমবায় লিমিটেডের সমিতির সভাপতি শামছুল হুদা বাবু (৪৫) বলেন, জলমহালটিতে প্রশাসনের রক্ষণাবেক্ষণ না থাকায় স্থানীয় জেলেরা নিষিদ্ধ মশারি জালসহ বিভিন্ন জাল দিয়ে দিনে -রাতে অবৈধভাবে অবাধে মাছ নিধন করে আসছে । এই জলমহালটিতে এখন মাছ শিকারের মহোৎসব চলছে। তিনি আরও বলেন, আমাদের সমিতির পক্ষ থেকেও এই জলমহালটি ইজারা পাওযার জন্য সাত মাস আগে আবেদন করেছি। জলমহালটি ইজারা না হওয়ায় আমাদের বিডির টাকা ব্যাংকে পড়ে থাকার পাশাপাশি সরকার প্রায় এক কোটি রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। উপজেলার সেলবরষ ইউনিয়নের মাটিকাটা গ্রামের বাসিন্দা ও সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য জুলফিকার আলী ভূট্রো (৪৮) বলেন, এই জলমহালটির মাছ হরিলুট হচ্ছে। যে যার মতো কারে এখানে মাছ শিকার করছেন। কেউ কোনো বাধা দিচ্ছে না। প্রশাসন এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ছাব্বির আহমেদ আকুঞ্জি বলেন, এই জলমহালটি নিয়ে আদালতে মামলা থাকায় এটি এখনো ইজারা দেওয়া যাচ্ছে না। মামলাটি দ্রুত নিস্পত্তি হবে বলে আশা করছি। পরে এটি ইজারা দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, অবৈধভাবে এই জলমহালটিতে কেউ মাছ ধরলে খোঁজ নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেব।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: জুনায়েদ চৌধুরী জীবন