প্রতিদিন প্রতিবেদক
দিরাই উপজেলার তিন লাখ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে ৭ বছর আগে উদ্বোধন করা হয় ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। কিন্তু এলাকার মানুষ এখনো উন্নত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত । জনবল সংকটসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত এই হাসপাতালে নতুন কোন পদ সৃষ্টি হয়নি। ৩১ শয্যার পুরাতন ভবনে ৭০টি শূন্য পদ নিয়েই চলছে চিকিৎসাসেবা। এখানে মোট ১৭৩টি পদের বিপরীতে রয়েছেন ১০৩ জন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ২৯ অক্টোবর সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম ও স্থানীয় সংসদ সদস্য প্রয়াত সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে হাসপাতালের উদ্বোধন করেন। হাওরাঞ্চলের মানুষের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে তখন ৩১ শয্যার হাসপাতালটিকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। সরেজমিনে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, উদ্বোধনের পর থেকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির কোন পরিবর্তন হয়নি। নিয়োগ হয়নি কোন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার। গত ২৫ বছর ধরে অকেজোঁ অবস্থায় পড়ে রয়েছে এক্স-রে মেশিন। যান্ত্রিক ত্র”টি থাকার কারণে বন্ধ রয়েছে জেনারেটর। কারেন্ট না থাকলে অন্ধকারেই থাকতে হয় রোগীদের। তাছাড়া, চিকিৎসক, নার্স, পরিচ্ছন্নতা কর্মী, আয়া, ওয়ার্ড বয় কম থাকায় হাসপাতালের স্বাভাবিক কার্যক্রম বিঘিœত হচ্ছে। বিভিন্ন সময়ে রোগীরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেঝেতে থেকে নোংরা পরিবেশে চিকিৎসা নিচ্ছেন। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে আজও হাসপাতালটি উন্নত সেবা দিতে পারছেনা হাওরপাড়ের গরিব-অসহায় মানুষদের। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্স সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন হাসপাতালে ৩’শ থেকে সাড়ে ৩’শ রোগী আসেন এবং প্রতি মাসে এখানে প্রায় দেড়শ’ রোগীর নরমাল ডেলিভারি হয়। হিসাব অনুযায়ী ১৫টা সিজার হওয়ার কথা থাকলেও সার্জারি এবং গাইনি বিশেষজ্ঞ না থাকার কারণে সব ধরনের অপারেশন বন্ধ রয়েছে। অপরদিকে, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট, ডেন্টাল, ফার্মাসিস্ট, রেডিওলজিস্ট, এসআই, পরিসংখ্যানবিদ, ক্যাশিয়ার, মেডিকেল টেকনিশিয়ান (ইসিজি) জুনিয়র মেকানিক, ড্রাইভার, অফিস সহায়ক, নিরাপত্তা প্রহরীসহ ৭০টি পদ শূন্য রয়েছে। চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা জানান, প্রাইভেট হাসপাতাল কিংবা ক্লিনিকে গিয়ে তাদের চিকিৎসা করানোর সামর্থ নেই। তাই তারা বাধ্য হয়েই এ হাসপাতালে আসেন। আবার অনেককে এখানে এসেও কাক্সিক্ষত চিকিৎসা না পেয়ে ফিরতে হয়। উপজেলার মকসপুর গ্রামের বাসিন্দা জুবায়ের মিয়া জানান, ৫০ শয্যা হাসপাতালের কার্যক্রম চালু হলে আমরা হয়তো একটু ভালো চিকিৎসা নেয়ার সুযোগ পেতাম। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ইয়াসিন আরাফাত জানান, ৫০ শয্যা হাসপাতাল পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসক, লোকবল, জনবল এবং এক্স-রে মেশিন মেরামতের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠির মাধ্যমে অবহিত করেছি।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: জুনায়েদ চৌধুরী জীবন