ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তৃতীয় ধাপে আগামীকাল ২৯ মে সুনামগঞ্জের ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
দোয়ারাবাজার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পাঁচজন চেয়ারম্যান, দশজন ভাইস চেয়ারম্যান ও পাঁচজন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ ইদ্রিস আলী বীরপ্রতীক- মোটরসাইকেল, বর্তমান চেয়ারম্যান দেওয়ান তানভীর আল আশরাফী চৌধুরী–আনারস, আরিফুল ইসলাম জুয়েল–দোয়াত-কলম, নুরুল আমিন ঘোড়া ও দেওয়ান আসিদ রাজা–কাপপিরিচ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন।
এছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপজেলা জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি তাজির উদ্দিন –তালা প্রতীক, বশির আহমদ–চশমা প্রতীক, আবু বকর ছিদ্দিক– বৈদ্যুতিক বাল্ব প্রতীক, আবুল কালাম-টিউবওয়েল প্রতীক, নূর হোসেন মো. আব্দুল্লাহ- মাইক প্রতীক, শরীফ আহমেদ–আইসক্রিম প্রতীক, জিয়াউর রহমান- উড়োজাহাজ প্রতীক, রাসেল মিয়া–টিয়াপাখি প্রতীক, সোনাধন দে–গ্যাস সিলেন্ডার প্রতীক, জে ইউ সেলিম- বই প্রতীক। এছাড়াও
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান সালেহা বেগম –প্রজাপতি প্রতীক, লাইলী আক্তার লাকি –সেলাই মেশিন প্রতীক, শিরিনা বেগম– হাঁস প্রতীক, সামছুন্নাহার রুমি ফুটবল প্রতীক, ঝর্ণা রানী দাস–কলস প্রতীকে নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন।
এই উপজেলায় বিএনপি থেকে বহিস্কৃত আরিফুল ইসলাম জুয়েল–দোয়াত-কলম প্রতীক ও বর্তমান চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা দেওয়ান তানভীর আল আশরাফী চৌধুরী বাবু-আনারস প্রতীকের মধ্যে দ্বিমুখী লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
সরেজমিনে সাধারণ ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এই উপজেলায় এবারও তারুণ্য নির্ভর জনপ্রতিনিধি বাছাইয়ে ভোটারদের আগ্রহ বেশি লক্ষ্য করা গেছে। এক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছেন বিএনপি থেকে বহিস্কৃত আরিফুল ইসলাম জুয়েল ও বর্তমান চেয়ারম্যান দেওয়ান তানভীর আল আশরাফী চৌধুরী বাবু।
বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা দেওয়ান তানভীর আল আশরাফী বাবুর পক্ষে স্থানীয় সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিকের পরোক্ষ সমর্থন থাকতে পারে বলে এলাকায় গুঞ্জন রয়েছে। এছাড়াও সুরমার দক্ষিণপাড় বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে আঞ্চলিক ঐক্যের টান সৃষ্টি হলে তাঁর বিজয়ের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
এদিকে বিএনপি থেকে বহিস্কৃত নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলাম জুয়েলও রয়েছেন সুবিধাজনক অবস্থানে। তাঁর পক্ষে এই উপজেলায় বিএনপি সমর্থিত ভোটারদের বড় একটা অংশের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সমর্থন রয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।
তবে ইদানিং একটি নারীঘটিত কেলেঙ্কারি অভিযোগ বিষয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ ভাইরাল হওয়ায় কিছুটা বেকায়দায় পড়েছেন আরিফুল ইসলাম জুয়েল। এতে ভোটের মাঠে নেতিবাচক প্রভাব পড়লে নির্বাচনী লড়াইয়ে তিনি পিছিয়ে পড়তে পারেন বলে ওয়াকিবহাল মহলের অভিমত। আর সেই সুযোগে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চলে আসতে পারেন উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ ইদ্রিস আলী বীরপ্রতীক। তবে ভোটের মাঠের শেষ হিসাব-নিকাশ কি হয়, এজন্য অপেক্ষা করতে হবে নির্বাচনের দিন ২৯ মে পর্যন্ত।
দোয়ারাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বদরুল হাসান বলেন, এলাকায় শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে সজাগ রয়েছি। এখন পর্যন্ত নির্বাচনী পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রয়েছে। আশা করি ভোটের দিনেও শান্তিপূর্ণ থাকবে।’
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জানান, ২৯ মে দোয়ারাবাজার উপজেলা পরিষদ নির্বাচন সকল প্রস্তুতি সম্পুর্ণ। ভোট গ্রহণের দিন আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী মাঠে থাকবেন। কোনপ্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে সে ব্যাপারে প্রশাসন সর্বোচ্চ সতর্কতায় রয়েছে।
দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ৯ টি ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৩০ হাজার ০৭৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬৪ হাজার ১৩৪ জন এবং নারী ভোটার ৬৫ হাজার ৯৪২ জন।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: জুনায়েদ চৌধুরী জীবন