বিশেষ প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জ-৪ আসনে প্রশাসনের সহায়তায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জাল ভোটের উৎসব করে লাঙ্গলের বিজয় ছিনিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সদর আসনের ফলাফল বাতিল করে পুনঃনির্বাচন দাবি করেন ওই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য মিসবাহ৷
সোমবার বিকালে নির্বাচন নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সামনে তিনি এসব কথা বলেন।
এই আসনে নৌকা নিয়ে বিজয়ী হয়েছেন নির্বাচন কমিশনের সাবেক সচিব ড. মোহাম্মদ সাদিক।
পীর মিসবাহ বলেন, নির্বাচনের আগের রাতে পুলিশ ও নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা প্রশাসনের কর্মকর্তারা আমার কর্মীদের সশরীরে ও ফোন করে নির্বাচনী কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে ভয়ভীতি দেখান। নির্বাচনের দিন দুপুর ১২ টার পর প্রায় সবগুলো কেন্দ্র থেকে কোথাও আমার এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়ে, কোথাও ভয় দেখিয়ে নৌকায় ভোট দিয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
তিনি বলেন, সদর উপজেলার বানীপুর কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার নৌকার প্রার্থীর প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন। তার মতো কিছু কর্মকর্তাকে ভোটগ্রহণের দায়িত্ব না দেওয়ার জন্য আমি লিখিতভাবে অভিযোগ করেছি। কিন্তু রামানুজ আচার্য্য নামের ওই প্রিসাইডিং অফিসারের হাতে নৌকায় সিল মারা ব্যালট এজেন্ট দেওয়ার সময় আমার এজেন্ট দেখতে পান। প্রতিবাদ করলে সিল মারা ব্যালটগুলো তিনি পকেটে ঢুকিয়ে ফেলেন। পরে ওই কেন্দ্রের নৌকার এজেন্টকে ভ্রাম্যমান আদালতে সাজা দিলেও প্রিসাইডিং অফিসারকে কোন শাস্তি দেওয়া হয়নি। তার মতো পক্ষপাতদুষ্ট প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের নাম উল্লেখ করে তাদেরকে ভোট গ্রহণের কার্যক্রম থেকে বিরত রাখতে লিখিতভাবে রির্টানিং কর্মকর্তাকে জানালেও অভিযোগ আমলে না নিয়ে তাদের সবাইকে নির্বাচনী প্রক্রিয়া যুক্ত রাখা হয়। এছাড়া সুনামগঞ্জ পৌর এলাকার একটি কেন্দ্রে ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতাদের জাল ভোট দেওয়ার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
তিনি বলেন, দুপুর ১২টার পরে ড. সাদিকের নিজের কেন্দ্রে জাল ভোট দেওয়া শুরু হয়৷ তিনি বুড়িস্থল কেন্দ্র পরিদর্শন করার পর পর সেখানে জাল ভোট দিতে শুরু করেন নৌকার সমর্থকরা। এভাবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত প্রায় সকল কেন্দ্রে জাল ভোটের উৎসব চলে।
তিনি বলেন, জাল ভোট দেওয়ার বিষয়টি আমি রিটার্নিং কর্মকর্তাকে ফোন করে জানাই। পরে সব জায়গা থেকে জাল ভোট দেওয়া শুরু হলে তাঁকে বার বার ফোন দিলেও তিনি আমার ফোন রিসিভ করেননি৷ আমি অভিযোগের একটি কপি হোয়াটসঅ্যাপে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে দিয়েছি৷
তিনি বলেন, নৌকার প্রার্থী ড. মোহাম্মদ সাদিক প্রশাসনকে ব্যবহার করে জাল ভোটের মাধ্যমে আমার নিশ্চিত বিজয় ছিনিয়ে নিয়েছেন। নির্বাচন শুরুর পর থেকেই তাঁর সমর্থকরা প্রচারণা দেন যে, যেকোনো মূল্যে নৌকাকে বিজয়ী করা হবে। নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমান সুনামগঞ্জ আসলে আমি এই বিষয়টি অবহিত করি।
জালিয়াতির নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে পুনঃনির্বাচন দাবি করেন পীর মিসবাহ।
উল্লেখ্য, সুনামগঞ্জ-৪ আসনে সাবেক সচিব ড. মোহাম্মদ সাদিক নৌকা প্রতীকে ৯০ হাজার ৫৯০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির বর্তমান সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ লাঙ্গল প্রতীকে পেয়েছেন ৩১ হাজার ৭২১ ভোট।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: জুনায়েদ চৌধুরী জীবন