জামালগঞ্জ উপজেলার সদ্য বিদায়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও মো: মাসুদ রানা কর্তৃক উপজেলার জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট ও ভিত্তিহীন অডিও বক্ত্যব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
১৯ এপ্রিল শুক্রবার দুপুরে জামালগঞ্জের জনপ্রতিনিধিদের আয়োজনে উপজেলা শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান গোলাম জিলানী আফিন্দী রাজু, ফেনারবাঁক ইউপি চেয়ারম্যান কাজল চন্দ্র তালুকদার ও বেহেলী ইউপি চেয়ারম্যান সুব্রত সামন্ত সরকার, সাচনা বাজার ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মাসুক মিয়া, ভীমখালী ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আখতারুজ্জামান তালুকদার, জামালগঞ্জ উত্তর ইউপি চেয়ারম্যান আবু হানিফা ও তাদের সাথে একাত্বতা ঘোঘনা করেন সদর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ কামাল হোসেন । বক্তারা বলেন, সদ্য বিদায়ী জামালগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো: মাসুদ রানার সাথে এলাকার উন্নয়নমূলক কাজ নিয়ে উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদের নয় জন জনপ্রতিনিধির সাথে দীর্ঘ দিন বিভিন্ন বিষয়ে মতবিরোধ চলছিল। এ কারনে তিনি জামালগঞ্জ থেকে বিদায়ের পুর্বে জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্য পুর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য প্রদান করে গেছেন, যা লন্ডন থেকে মার্ক মিডিয়ায় সেটি প্রচার হয়। তার দেয়া এই রেকর্ডিং তথ্য সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।
বেহেলী ইউপি চেয়ারম্যান সুব্রত সামন্ত সরকার বলেন, সদ্য বিদায়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: মাসুদ রানা’র কুরুচিপূর্ণ একটি অডিও বক্তব্যের সাক্ষাতকার উপজেলা সকল চেয়ারম্যান ও উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বক্ত্যব্যর তীব্র নিন্দান জ্ঞাপন করেন। বেহেলী বাজারের উত্তর পাড়ে নির্মিত নতুন বাজারটির ব্যাপারে তিনি যা বলেছেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি শুধু প্রকৃত ব্যবসায়ীদেরকে বাজার ভীট বন্দোবস্ত দিতে অনুরোধ করেছিলাম। এখন তিনি উল্টো আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা কথা বলে গেছেন। ফেনারবাঁক ইউপি চেয়ারম্যান কাজল চন্দ্র তালুকদার বলেন,
আমি সিলেট চা বাগানে চাকরি করি, শেখ হাসিনা পল্লীর জন্য ভূমিহীনদের সনদ প্রদান করিনি। এছাড়াও নিয়মিত অফিস করিনা। অথচ তিনি নিজেই আবার জেলা প্রশাসক বরাবরে আমি নিয়মিত অফিস করি ও শেখ হাসিনা পল্লীর জন্য ভূমিহীনদের সনদ দিয়েছি বলে একটি প্রত্যয়ন প্রদান করেছেন। একজন ইউএনও সরকারের গুরুত্বপূর্ণ একটি জায়গা থেকে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ানো কথা বলে গেছেন। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
সাচনা বাজার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মাসক মিয়া বলেন, আমি সরকারের দেয়া দায়িত্ব শতভাগ পালন করার চেষ্ঠা করি। আমি আমার সম্মানিত ভাতা পর্যন্ত ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে দান করে দেই। আমার ইউনিয়নে সরকারী গুচ্ছগ্রামের বরাদ্দ ১৬০ টন চাল। আমি এই প্রজেক্টের মাটি ফেলার নব্বই শতাংশ কাজ শেষ করেছি। অথচ একটি টাকাও উত্তোলন করিনি। কিন্তু বিদায়ী ইউএনও মাসুদ রানা আমার বিরুদ্ধে ৮০ লাখ টাকার একটি মিথ্যা তথ্যে অভিযোগ দিয়েছে। তিনি এই কাজ তার ভগ্নিপতি দিয়ে করাতে চেয়েছিলো, আমি দেইনি বলেই আমার বিরুদ্ধে এই ধরনের মিথ্যাচারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ করছি।
ভীমখালী ইউপি চেয়ারম্যান আখতারুজ্জামান তালুকদার বলেন, ইউএনও মাসুদ রানা আমাদের বিরুদ্ধে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। এবং তিনি জামালগঞ্জ -সুনামগঞ্জ রাস্তার সংস্কার কাজ আমাদের ৬ ইউনিয়ন পরিষদের বরাদ্দ থেকে টাকা নিয়ে উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর নিয়ে প্রজেক্ট তৈরি করে তৃতীয় পক্ষ দিয়ে নি¤œমানের কাজ করেছেন। এবং অনেক টাকা আত্মসাৎতের অভিযোগ করেন।
জামালগঞ্জ উত্তর ইউপি চেয়ারম্যান মো হানিফ মিয়া বলেন, আমার ইউনিয়নের কামিনীপুর গ্রামে একটি গুচ্ছ গ্রামে ১০৫ টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এবং সেখানে মাটি ফেলতে হবে ৫ লাখ স্কয়ার ফুট। ইউএনও মাসুদ রানা নিজে এই প্রকল্পের কাজ উদ্বোধন করেছেন। আমি নব্বই হাজার ফুট মাটি ফেলার পর তিনি আমাকে বললেন তার ভগ্নিপতিকে প্রতি ফুটে ২ টাকা করে দিতে হবে। আমি টাকা দিতে পারবোনা বলে জানালে তিনি কাজ বন্ধ করে দেন। আমি এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান গোলাম জিলানী আফিন্দী রাজু বলেন, একজন ইউএনও উপজেলার সকল জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদে কলংকিত করেছে, উপজেলা চেয়ারম্যান কে ভম্বল বলে অভিহিত করেছে যা কুরুচিপুর্ণ। তিনি চেয়েছিলেন, তার ভগ্নিপতিকে দিয়ে এ সব কাজ করাতে। উনি যত দিন জামালগঞ্জে ছিলেন আমরা দুর্ভোগে ছিলাম। তিনি চলে যাওয়ায আমরা পরিত্রান পেয়েছি। উনি জামালগঞ্জের সর্বশেষ কয়েকটি প্রকল্প থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতে নিতে চেয়েছিলেন। আমাদের জামালগঞ্জের জনপ্রতিনিধিদের সাহসিক ভূমিকা তিনি তা পারেননি বলে মিথ্যা প্রচার করে গেছেন।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: জুনায়েদ চৌধুরী জীবন