প্রতিদিন প্রতিবেদক : সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলায় চাঁদাবাজ মকবুল হোসেন আফিন্দি বাহিনীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের দাবীতে জেলা পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) জেলা পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগটি দায়ের করা হয়। উপজেলার সাচনাবাজার ইউনিয়নের দূর্লভপুর গ্রামের মরহুম হাজী রজব আলীর পুত্র ইজারাদার মোঃ ইয়াকবীর হোসেন,চাঁদাবাজ মকবুল হোসেনসহ তার বাহিনীর মোট ৮ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগটি দায়ের করেছেন।
অভিযুক্তরা হচ্ছেন, দূর্লভপুর গ্রামের মোঃ হারিছ মিয়া আফিন্দীর পুত্র মোঃ মকবুল হোসেন আফিন্দী,জামালগঞ্জ সদর ইউনিয়নের শাহপুর গ্রামের আব্দুল কাদির গনীর পুত্র তোফায়েল গনী তোফাজ্জল ও জাকির হোসেন গনী,আব্দুল মজিদ গনীর পুত্র আতিকুর গনী,ফকির আহমদের পুত্র সোহাগ আহমদ,হেলেনা খাতুনের পুত্র আলমগীর,আব্দুল হেকিমের পুত্র হিমেল এবং ভীমখালি ইউনিয়নের ছোট ঘাগটিয়া গ্রামের মৃত উকিল আলীর পুত্র তালেব হোসেন প্রমুখ।
অভিযোগে প্রকাশ,২০ সেপ্টেম্বর বুববার দুপুর ১২ টায় জামালগঞ্জ থানার ভীমখালি ইউনিয়নের ছোট ঘাগটিয়া ও বড় ঘাগটিয়া গ্রামের মধ্যবর্তী সুরমা নদীর দক্ষিণ পাড়ে, জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ দায়েরের আক্রোশে মকবুল হোসেন আফিন্দি আরো ক্ষুব্ধ ও বেপরোয়া হয়ে ইজারাদারের কালেকশনের নৌকায় থাকা কালেক্টরদেরকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে কালেক্টর মোঃ তহুর মিয়ার কাছ থেকে মকবুল হোসেন আফিন্দি জোরপূর্বকভাবে নগদ টাকাসমেত একটি হাতব্যাগ ও কালেক্টর সোহাগ মিয়ার কাছ থেকে তোফায়েল গনী তোফাজ্জল ১টি রসিদ বহি জোরামূলে ছিনতাই করে। পরে ছিনতাইকৃত রসিদ বহি দ্বারা মকবুল হোসেন আফিন্দি ও তার বাহিনী বিভিন্ন পাথর ও বালিবাহী নৌপরিবহন থেকে বিভিন্ন রেটে চাঁদা উত্তোলন করে। উত্তোলিত চাঁদার প্রায় ৩০ হাজার টাকা মকবুল হোসেন ও তার বাহিনী ভাগ ভাটোয়ারা করে নেয়। ছিনতাইকৃত রসিদ দ্বারা অতিরিক্ত ইজারামূল্য আদায় করে ইজারাদার ও তার লোকজনদেরকে ফাসিয়ে তাদের ইজারালব্ধ ঘাট বাতিল করে দেওয়ার হুমকী দেয় উক্ত মকবুল বাহিনী। চাঁদাবাজ মকবুল হোসেন আফিন্দি,
বিএনপি নেতা নূরুল হক আফিন্দির নেতৃত্বাধীনবালুপাথরব্যবসায়ী সমিতি নামের একটি সংগঠনের পরিচয় ব্যবহার করে উক্ত সংগঠনের নামে উস্কানীমূলক কথাবার্তা রেকর্ড করত: এলাকায় মাইকিং করে,গুজব রটিয়ে সাধারণ বালি পাথর ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদেরদেরকে ইজারাদার ইয়াকবীরের বিরুদ্ধে ফুসলিয়ে ও উত্তেজিত করে তার মারাত্মক ক্ষতিসাধনসহ বালিপাথর লোড আনলোডের ঘাটটি বন্ধ রাখার জন্য ঘোষণা দিয়েছে। এসব করার নামে মকবুল বাহিনী মূলত: নিজেদের বিশেষ ফায়দা হাসিলের অপচেষ্টার পাশাপাশি সরকারের রাজস্ব প্রাপ্তির বিরুদ্ধে মারাত্মক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিতে লিপ্ত রয়েছে।
উল্লেখ্য উপজেলার ভীমখালি ইউনিয়নের নোয়াগাঁও বাজার পর্যন্ত এলাকার সুরমা নদীর উভয় পাড়ে উঠানামাকৃত মালামালের এল এস সি এবং নৌযানের বার্দিং চার্জ আদায় কেন্দ্র ঘাটটি ২০২৩-২৪ সনের জন্য ১ কোটি ৫ হাজার টাকায় ইজারা প্রাপ্ত হয়েছেন বাংলাদেশ আভ্যন্তরীন নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডাবিøউটিএ) এর বৈধ ইজারাদার ইয়াকবীর আফিন্দী।
কিন্তু মকবুল হোসেন আফিন্দি,এলাকায় চাঁদাবাজ মকবুল হোসেন আফিন্দি বাহিনী সৃষ্টি করে তাকে নানাভাবে হয়রানী ও ক্ষতিগ্রস্থ করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। নিজেকে বিভিন্ন উপরমহলের নেতার লোক বলে পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন মহলের নাম ভাঙ্গিয়ে বালি পাথর ব্যবসায়ী,নৌপরিবহনের মাঝি ও কোন কোন ইজারাদারদের কাছ থেকে জোরপূর্বকভাবে চাঁদা আদায় করা মকবুল হোসেন আফিন্দির নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার। ইয়াকবীর আফিন্দীর পূর্বের ইজারাদার শাহ রুবেল আহমদ এর বিরুদ্ধে উক্ত মকবুল হোসেন,তার চাঁদাবাজ বাহিনীর বিভিন্ন লোকজনকে বাদী সাজিয়ে পৃথক ৩টি হয়রানীমূলক মামলা দায়ের করলে পিবিআইসহ পুলিশের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তে এসব মামলা মিথ্যা বলে প্রমাণিত হয়। বৈধ ইজারাদারদের বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে সরকারী রাজস্বের ক্ষতিসাধনে মকবুল হোসেন ও তার বাহিনী সর্বদাই তৎপর থাকে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
এর আগে গত ২০ আগস্ট রবিবার সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে দূর্লভপুর বাজারস্থ তার পরিচালিত মেসার্স আর.এস কন্সট্রাকশনের অফিসঘরে বসে থাকাবস্থায় মকবুল হোসেন আফিন্দী,তার বাহিনীকে নিয়ে ইয়াকবীর আফিন্দীর কাছে ১৫ লাখ টাকা টাকা চাঁদা দাবী করে। অন্যথায় তাকে বিনিয়োগ ছাড়াই ২৫% শেয়ার দেয়ার জন্য ইয়াকবীর কে আদেশ প্রদান করে। চাহিতো চাঁদা এক সপ্তাহের মধ্যে প্রদান না করলে বা শেয়ারের প্রস্তাব না মানলে সে ইয়াকবীরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সরকারী দপ্তরে একটির পর একটি হয়রানীমূলক অভিযোগ দায়ের করে তাকে অন্যায়ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করবে বলে হুমকী দেয়। এদিকে অভিযোগের প্রেক্ষিতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য জামালগঞ্জ থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার এহসান শাহ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: জুনায়েদ চৌধুরী জীবন