স্বামী ওয়াসকুরুনীকে যৌতুকের মামলায় বিজ্ঞ আদালত জেলহাজতে প্রেরণ করায় ক্ষুব্ধ শাশুড়ি রোকিয়া বেগম,তাদের বসতঘর থেকে জোরপূর্বকভাবে বিতাড়িত করেছে ভিকটিম পুত্রবধুকে। এমনকি ভিকটিমের নাবালক পুত্র সাব্বিরকে তার মায়ের কাছে যেমন যেতে দিচ্ছেনা তেমনি ঐ ভিকটিমের জেষ্ট পুত্র শাওন (১১) কেও ভিকটিম মায়ের কাছ থেকে আড়াল করে রেখেছে। গত ৭ সেপ্টেম্বর সকাল ৮ টা থেকে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কিশোর শাওনের কোন সন্ধান পাচ্ছেননা ভিকটিম। শাওন সদর উপজেলার রঙ্গারচর নোয়াহাটি গ্রামের কামাল মিয়ার পুত্র। তার পিতা কামাল মিয়া ভিকটিমকে পরিত্যাগ করার পর থেকেই সে ভিকটিমের কাছে থাকে এবং শহরের জেলরোডস্থ একটি পোল্ট্রি দোকানে দৈনন্দিন ভিত্তিতে কাজ করতো। প্রতারক রোকিয়া বেগম সৎনাতি শাওনকে বিভিন্ন সময় জিম্মি করে তার আয় রোজগারের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। একইভাবে সৎপিতা ওয়াসকুরুনীও কিশোর শাওনের গত ২ বছরের আয়ের একটি টাকাও মা হিসেবে ভিকটিমের হাতে তুলে দেয়নি। এদিকে অপহরণ করে নিজের হেফাজতে কিশোর শাওনকে জিম্মি রেখে সৎদাদী রোকিয়া বেগম,বিজ্ঞ আদালতে নিজের শেখানো বুলি শিখিয়ে হাজতাবদ্ধ ছেলের জামিন আদায়ে অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অন্যদিকে ভিকটিমের জেষ্ট পুত্র শাওন নিখোঁজের ঘটনায় সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানায় জিডি নং ১০৩১ তাং ১৭/০৯/২০২৪ইং দায়ের করা হয়েছে। শাওন অপহরণের সাথে একজন প্রতারক সংবাদকর্মীসহ একটি চক্র জড়িত রয়েছে বলেও বিশ্বস্থ সূত্রে জানা গেছে। সৎ নাতি কিশোর শাওনকে নিয়ে অপহরণকারী রোকিয়া বেগম ও তার সহযোগীরা সর্বশেষ কোন কারসাজীতে লিপ্ত হয় সেটাই এখন দেখার বিষয়। উল্লেখ্য সুনামগঞ্জে যৌতুকের জন্য ধারাবাহিকভাবে নির্যাতনকারী প্রতারক স্বামী ওয়াসকুরুনী (৩৭) কে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে আদালত। সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের সৈয়দপুর গ্রামের নুর মিয়ার পুত্র ওয়াসকুরুনী বর্তমানে সুনামগঞ্জ পৌর এলাকার ৩নং ওয়ার্ডের পূর্ব সুলতানপুর গ্রামের বাসিন্দা। সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) আমল গ্রহনকারী জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সদর কোর্টের বিজ্ঞ বিচারক যৌতুক নিরোধ আইনের ৩ ও ৪ ধারায় ভিকটিম স্ত্রীর দায়েরকৃত সিআর ৩৭৮/২০২৪ (সদর) মামলায় জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন। বাদীপক্ষে এডভোকেট ফয়সল আহমদ ও দিপংকর বনিক এডভোকেট মামলাটি পরিচালনা করেন। মামলার বিবরনে প্রকাশ, ওয়াসকুরুনী তার বন্ধুবান্ধব সহকারে সুনামগঞ্জ শহরের কাজিরপয়েন্টস্থিত কাজী অফিসে নিয়ে ২ লক্ষ টাকা দেন মোহরানা ধার্যক্রমে ভিকটিমকে বিবাহ করে। কিন্তু বিবাহের কাবিনের কপি এখন পর্যন্ত তাকে প্রদান করেনি যৌতুকলোভী প্রতারক ঐ স্বামী। বিবাহের পর তার ঔরষে ভিকটিমের ২য় সন্তান সাব্বির (বর্তমান বয়স সাড়ে চার বছর) এর জন্মের ৩ মাসের ব্যবধানে স্বামী ওয়াসকুরুনী গত ৩০/১১/২০১৭ইং তারিখে ভিকটিমকে সৌদিআরব প্রবাসে যেতে বাধ্য করে। সৌদিআরবের দাম্মান শহরে গৃহকর্মীর কাজ করে ভিকটিম জীবিকা নির্বাহ করে আসাবস্থায় ব্যবসার কথা বলে উদ্দেশ্যমূলক প্রতারনার আশ্রয় নিয়ে ভিকটিমের আয় রোজগারের সাড়ে ৪ লক্ষ টাকা এবং দ্বিতীয় দফায় বিদেশ থাকাবস্থায় সাড়ে ৫লক্ষ টাকা নিয়ে যায়। ভিকটিমের কাছ থেকে নানা প্রলোভনে নেয়া টাকা দ্বারা প্রতারক ওয়াসকুরুনী তার ছোট ভাই ফারুক মিয়াকে সৌদিআরবে পাটায় এবং বর্তমান বাড়ী ক্রয় করে। দেশে অবস্থানকালে প্রতারক ওয়াসকুরুনী ভিকটিমের ১ ভরি ৩ আনা ওজনের স্বর্ণের চেইন মূল্য ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা ব্যবসার কথা বলে নিয়ে যায়। সর্বশেষ ২০২২ইং সনের ৯ ডিসেম্বর ঐ ভিকটিম দেশে এসে তার পাঠানো টাকার এবং যাবতীয় আয়ব্যয়ের হিসাব চাইলে শাশুড়ি রোকিয়া বেগম ও স্বামী ওয়াসকুরুনী গত ৩০/০৬/২০২৩ইং তারিখে তাদের প্রতিবেশী এক সাংবাদিকের বাসায় ভিকটিমকে নিয়ে তার পাওনা টাকা পরিশোধ করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা দেই দিচ্ছি করে সময় ক্ষেপন করে। গত ১১/০১/২০২৪ইং রোজ বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৯ টায় ভিকটিমের নবীনগরস্থ ভাড়াটে বাসায় এবং গত ২২/০৮/২০২৪ইং বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২.১০ টায় পূর্ব সুলতানপুরস্থ বসতঘরে ভিকটিমকে খুন করার লক্ষ্যে লোহার দায়ের দ্বারা মাথায় প্রচন্ড বারি মেরে রক্তাক্ত ফোলা জখম করে স্বামী ওয়াসকুরুনী। এসব ঘটনার দায়ে ভিকটিম ইতিপূর্বে ২টি অভিযোগ দায়ের করলে সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার এসআই রাজ্জাক গত ২ সপ্তাহ পূর্বে ঘটনাস্থলে গিয়ে ভিকটিমের দায়েরকৃত অভিযোগের তদন্ত করেন। শ্বাশুড়ি রোকিয়া তখন প্রতিবেশি ঐ সাংবাদিকের বাসায় গিয়ে আবারও পাওনা টাকা পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ৩ শত টাকার নন জুডিসিয়েল স্টাম্পে লিখিত অঙ্গীকারনামা প্রদান করবে মর্মে তদন্ত কর্মকর্তাকে অবহিত করে। কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তা ঐ ভিকটিমের অভিযোগটি আমলে নিয়ে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনার এক সপ্তাহ যেতে না যেতেই ২ সেপ্টেম্বর রবিবার বিকেল সাড়ে ৩ টা হতে ৫ টা পর্যন্ত ওয়াসকুরুনী ও তার মাতা রোকিয়া বেগম উভয়ে মিলে ভিকটিমের চুলমুঠো ধরে এলোপাতাড়ীভাবে কিলঘুষি মেরে ঘরের মেঝেতে ফেলে ফুটবলের মত লাথি মারতে মারতে আহত করে ভিকটিমকে। ইত্যবসরে ভিকটিমের চাচা মোঃ আব্দুল আহাদ ও ছোট ভাই লিটন মিয়া ভিকটিমকে দেখার জন্য তাদের বসতঘরে এলে রোকিয়া ও ওয়াসকুরুনী ভিকটিমকে তাদের সাথে নিয়ে যাওয়ার জন্য নির্দেশ দেয়। ভিকটিমের চাচা ও ভাই ভিকটিমের সমস্ত পাওনা পরিশোধ করার জন্য শর্ত দিলে স্বামী ও শাশুড়ি নামের ঐ প্রতারকরা নিরবতা পালন করে। পরে ভিকটিমের চাচা ও ভাই তাদের বাড়ী হতে বের হয়ে জেলা সদর হাসপাতালে চলে গেলে উক্ত প্রতারক সন্ত্রাসীরা আবারও ভিকটিমকে চুলমুঠো ধরে টানা হেছড়া করত: ঘরের বাহিরে নিয়ে আব্দুল হামিদের দোকানের সামনে পাকা রাস্তায় ফেলে বেদম কিলঘুষি ও লাথি মেরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফোলা তেতলানো জখম করে। শাশুড়ি রোকিয়া ভিকটিমের বুকে কামড় মেরে মাংস ছিড়ে নেয়ার চেষ্টা করে। সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার এসআই উজ্জল মিয়া ভিকটিমের অভিযোগটি তদন্ত করলেও দায়েরকৃত অভিযোগটি এখন পর্যন্ত এফআইআর না করায় ন্যায়বিচার পাচ্ছেনা ঐ ভিকটিম।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: জুনায়েদ চৌধুরী জীবন