বিশেষ প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার হাসনাবাজ গ্রামে মসজিদের কাঁঠাল নিলাম নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে ৪ জন নিহতের ঘটনায় শান্তিগঞ্জ থানায় ২৭৬ জনকে আসামী করে তিনটি পৃথক হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। বুধবার মালদার মিয়া গোষ্ঠির আব্দুল বাসিরের ছেলে শাহজাহান মিয়া হত্যার ঘটনায় প্রতিপক্ষ দ্বীন ইসলাম গোষ্ঠির ১১৩ জনকে অভিযুক্ত করে একটি হত্যা মামলা রুজু করেছে। এর আগে দ্বীন ইসলামের পক্ষের আব্দুল লতিফের ছেলে নুরুল হক ও আব্দুস সুফির ছেলে বাবুল মিয়া নিহতের ঘটনায় ১৬৩ জনকে আসামী করে আরো পৃথক দুটি মামলায় দায়ের করে। এ নিয়ে কাঁঠালকান্ডে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনায় শান্তিগঞ্জ থানায় পৃথক তিনটি মামলা রুজু হয়েছে।
দু’পক্ষের তিনটি মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন শান্তিগঞ্জ থানার ওসি মো. খালেদ চৌধুরী।
জানা যায়, আজ (১৯ জুলাই) বুধবার সকালে মালদার মিয়া পক্ষের শাহজাহান মিয়া হত্যার ঘটনায় তার ভাতিজা সৈয়দ হোসেন বাদী হয়ে হত্যা মামলাটি করেন। এর আগে গত রবিবার সন্ধ্যায় দ্বীন ইসলাম গোষ্ঠীর নিহত নুরুল হকের ভাই তফজ্জুল হক ও বাবুল মিয়ার ভাই ফারুক আহমদ বাদী হয়ে মালদার মিয়ার পক্ষের ১৬৩ জনকে আসামী করে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন। পুলিশের হাতে আটক হওয়ার ভয়ে সংঘর্ষের পর উভয় পক্ষ আত্নগোপনে চলে যায়। এ কারনে মামলা রুজু করতে প্রায় সপ্তাহ দিন পার করে উভয় পক্ষ।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার (০৭ জুলাই) হাসনাবাজ জামে মসজিদে জুমা’র নামাজের পর একটি কাঁঠাল নিলাম নিয়ে মালদার মিয়ার গোষ্ঠি ও দ্বীন ইসলাম গোষ্ঠির লোকজনের মাঝে বাকবিতণ্ডা হয়। এর জেরে গত সোমবার (১০ জুলাই) সকাল ১১ টায় হাসনাবাজ গ্রামে দুই গোষ্ঠি রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।
সংঘর্ষের ঘটনায় দ্বীন ইসলাম গোষ্ঠির হাসনাবাজ গ্রামের আব্দুল লতিফের ছেলে নুরুল হক, আব্দুস সুফির ছেলে বাবুল মিয়া ও মালদার মিয়ার গোষ্ঠীর আব্দুল বাসিরের ছেলে শাহজাহান মিয়া মারা যান। পরদিন রাতে অন্যগ্রামে পালিয়ে যাওয়ার সময় মালদার মিয়ার পক্ষের মুখলেছুর রহমান নামের আরেকজন মারা গেছে বলে প্রচার হলেও মুখলেছুরের স্ত্রীর দাবি করেন তার স্বামীর স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় তার স্বামীর মৃত্যু হয়নি। এত করে মুখলেছুরের মৃত্যু নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়। পুলিশ বলেছে, ময়না তদন্তের রিপোর্ট পাবার আগে কিভাবে মুখলেছুর রহমানের মৃত্যু ঘটেছে তা নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না।
এদিকে সংঘর্ষের ঘটনায় এ পর্যন্ত শান্তিগঞ্জ থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে উভয়পক্ষের ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এরমধ্যে গত (১৮ জুলাই) মঙ্গলবার সংঘর্ষের মুলহোতা মইনুল হককে ভারত হয়ে ফ্রান্সে পালিয়ে যাওয়ার সময় গ্রেপ্তার করেছে বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশ। এর আগে গত বুধবার মইনুল হকের ভাই এবাদুল হককে সিলেট থেকে দুবাইগামী একটি ফ্লাইট থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এব্যাপারে শান্তিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খালেদ চৌধুরী বলেন, দুই পক্ষের তিনজন বাদী হয়ে পৃথক তিনটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলার আসামীদের গ্রেপ্তারে শান্তিগঞ্জ থানা পুলিমশর অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনার তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। গ্রামটিতে বর্তমানে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করছে।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: জুনায়েদ চৌধুরী জীবন