বিশেষ প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জ ধান কাটা উৎসবে যোগ দিয়ে কৃষকদের সাহস যুগিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান ও পানি সম্পদ উপ-মন্ত্রী এনামুল হক শামীম। বুধবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে জেলার শান্তিগঞ্জ উপজেলার দেখার হাওরে বোরো ধান কর্তন উৎসবে যোগ দেন তারা।
এসময় আয়োজিত সমাবেশে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আন্দোলন করে বিএনপি সরকারের পতন ঘটাতে পারবে না। তিনি বলেন, ২০১৪ সালে টানা ৯০ দিন আন্দোলন করেও ব্যর্থতার গ্লানি নিয়ে ঘরে ফিরেছে বিএনপি। সেসময় খালেদা জিয়া ব্যর্থ হয়ে প্রথমে তার গুলশানে বাসায় এরপর জেলে গেছেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকেই দেশকে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। কাজেই আওয়ামী লীগকে হুমকি দিয়ে, অগ্নিসংযোগ করে, মানুষ পুড়িয়ে সরকারের পতন ঘটানোর চিন্তা বাদ দেন। নির্বাচনে আসতে হবে। জনগন যদি আপনাদের ভোট দেয় আমরা স্যালুট করে গণভবণ ছেড়ে ঘরে চলে যাব। আপনাদের হুমকি ধামকির মুখে আমরা দেশ ছেড়ে পালাব না। বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা কোন দিন এদেশ ছেড়ে পালাবেন না।
বুধবার সকালে শান্তিগঞ্জ উপজেলার দেখার হাওরে বোরো ধান কর্তন উৎসবে যোগ দিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. রাজ্জাক বলেন, দেশ কৃষিক্ষেত্রে এখন স্বয়ংসম্পূর্ণ। খাদ্যের ঘাটতি নেই। ২০০৪ সালে বিএনপি-জামাত শাসনামলে দেশে দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছিল। আওয়ামী লীগের শাসনামলে ১৪ বছরে একটি মানুষও না খেয়ে মারা যায়নি। কিন্তু গত ১৪ বছরে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। ফসলহানী রক্ষায় সরকার বাঁধ নির্মানে পর্যাপ্ত বরাদ্দ দিচ্ছে। আগামজাত ফসল আবিষ্কারে কৃষি গবেষণা চলছে। আসা করি আগামী ১-২ বছরের মধ্যে এসব ফসল হাওরে ফলানো হবে। এতে পানি আসার আগেই ধান কর্তন শেষ হবে।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, কৃষকরা অনেক পরিশ্রম করে হাওরে ধানের চাষাবাদ করে। কিন্তু আগাম বন্যার কারণে কৃষকদের অনেক বছর স্বপ্নের ধান ঘরে তোলার আগেই তলিয়ে যায়। এ বছর হাওরে এসে খুব ভালো লাগছে বোরো ধানের ফলন দেখে। এরই মধ্যে হাওরের ৩০ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে। এবার বন্যার আগেই হাওরের ধান ঘরে উঠে যাবে। এরই মধ্যে ১ হাজার ধান কাটার (হারভেস্টার) মেশিন হাওরের ধান কাটছে। এ বছর ধানের যে দাম নির্ধারণ হয়েছে তা থেকে কৃষকরা অনেক লাভবান হবেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই করে হাওরে ধান ঘরে তোলা সম্ভব নয়। প্রকৃতির সঙ্গে আমাদের মানিয়ে নিতে হবে। তবে হাওরে আর মাটির বাঁধ নির্মাণ হবে না। বৈজ্ঞানিক ভাবে গবেষণা করে ফসলের সময়টা ১২০ দিনের জায়গায় যদি ১০০ দিন করার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। আমরা আশা করছি এতে আমরা সফল হবো। এমনকি আগাম বন্যা আসার আগেই হাওরের ধান ঘরে তুলতে পারবে কৃষকরা। তিনি বলেন, জলাভূমি হাওরে আর কোনো সড়ক নির্মাণ হবে না। তবে উড়াল সড়ক হবে, যেটির কাজ এরই মধ্যে শুরু হয়েছে।
এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- পানি উপ-মন্ত্রী এনামুল হক শামীম, সুনামগঞ্জ ৪ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ।
সুনামগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক জাকির জাফরান, শান্তিগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি মোছা. সকিনা আক্তার এর যৌথ সঞ্চালনায় এতে অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত ছিলেন পানিসম্পদ মন্ত্রনালয়ের সচিব নাজমুল আহসান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ সাজ্জাদ, বাংলাদেশ কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি ও কৃষিবিদ শাখাওয়াত হোসেন সুইট, সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী, জেলা পুলিশ সুপার মোঃ এহসান শাহ, সুনামগঞ্জ কৃষি অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিমল চন্দ্র সোম, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নোমান বখত পলিন, জয়কলস ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল বাছিত সুজন,কৃষক প্রতিনিধি আব্দুল গণি প্রমুখ।